কখন “ইনশাআল্লাহ্” বলা হারাম?

“ইনশাআল্লাহ্” শব্দের অর্থ হলো, যদি আল্লাহ্ চান (তাহলে আমি কাজটি করবো বা কাজটি হবে)। কথা ও কাজে “ইনশাআল্লাহ্” ব্যাবহার ইসলাম ও মুসলমানদের সংস্কৃতি।
মুসলমানরা যেসব শব্দ বেশি ব্যাবহার করে, তাঁর মধ্যে একটি হলো “ইনশাআল্লাহ”। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে কয়েকজন নবীও এ পরিভাষা ব্যাবহার করতেন। হজরত ইয়াকুব, শোয়াইব, খিজির ও ইসমাইল (আঃ) কথা বলার সময় “ইনশাআল্লাহ্” ব্যাবহার করেছেন।

একবার হজরত মুসা (আঃ) সৃষ্টিজগতের গোপন রহস্য সংক্রান্ত বিভিন্ন জ্ঞান অর্জন করতে চাইলেন। এ লক্ষ্যে তিনি হযরত খিজির (আঃ)-এর শিষ্যত্ব গ্রহণ করার দরখাস্ত করেন। তখন হযরত খিজির (আঃ)  বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে আমার সঙ্গে থাকার ধৈর্য আপনার নেই।’ এ কথার জবাবে মুসা (আঃ) বলেন, “ইনশাআল্লাহ্” আপনি আমাকে ধৈর্যশীল হিসেবে পাবেন। *[সুরা কাহফ, আয়াত : ৬৭-৬৯]

এছাড়া হযরত ইব্রাহীম (আঃ) যখন তাঁর ছেলে হযরত ইসমাঈল (আঃ) কে সম্বোধন করে বলেন, ‘হে বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি তোমাকে জবেহ করছি। এবার চিন্তা করে বলো, তোমার অভিমত কী?’ এমন ভয়ঙ্কর স্বপ্নের কথা শুনেও হযরত ইসমাঈল (আঃ) স্বাভাবিক স্বরে বলেন, “আব্বাজান! আপনি সেটাই করুন। “ইনশাআল্লাহ্* আপনি আমাকে ধৈর্যশীল হিসেবে পাবেন। *[সুরা সাফফাত, আয়াত : ১০২]

“ইনশাআল্লাহ্”শব্দ ব্যাবহারের সঠিক নিয়ম আমরা হয়তো অনেকেই জানি না, এমন অনেক মানুষ আছে তাদেরকে কেমন আছেন জিজ্ঞেস করলে,বলে, “ইনশাআল্লাহ্” ভালো আছি। এমন স্থানে ইনশাআল্লাহ ব্যাবহার অশুদ্ধ হবে কারণ, “ইনশাআল্লাহ্” ব্যাবহার হয় কেবল ভবিষ্যতের ক্ষেত্রে। কেউ যদি বলে কেমন আছেন তাহলে বলতে হয় আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি ।

যে কোনো বৈধ কাজ যা ভবিষ্যতে করার ইচ্ছে আছে বা কোন কথা যা কাউকে বলার ইচ্ছা আছে অথবা ভবিষ্যতে ভালো কিছু করার ইচ্ছা প্রকাশের ক্ষেত্রে “ইনশাআল্লাহ্” বলা অনেক ফজিলতপূর্ণ। এতে সওয়াব পাওয়া যাবে। কাজটি যদি তার জন্য কল্যাণময় হয় তাহলে আল্লাহর রহমতে কাজটি সফলভাবে হবে ।

কিন্তু অবৈধ কোনো কাজ করার ব্যাপারে “ইনশাআল্লাহ্” বলা জায়েজ নেই।
যেমন-চুরি, ডাকাতি, ব্যভিচার, দুর্নীতি, সন্ত্রাসী, অশ্লীলতা, সিনেমা দেখা, মিথ্যা কথা বলা mm,etইত্যাদি নোংরা কর্মকাণ্ডসহ যাবতীয় অপোরাধ ও অনৈতিক কাজে “ইনশাআল্লাহ্” বলা সম্পূর্ণ হারাম।

আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা কখন কি বলতে হয় ঠিকভাবে সেটা জানেন না । হারাম কাজের শুরুতে অনেকে বিসমিল্লাহ বলে এবং ভবিষ্যতে নোংরামি করার জন্য ইনশাল্লাহ বলে । এগুলো চরম অন্যায় ইসলাম ধর্মের অবমাননা করা হয় । ইচ্ছাকৃতভাবে গোস্তাখি স্বরূপ যদি কেউ হারাম কাজের পূর্বে বিসমিল্লাহ বা ইনশাল্লাহ বলে তাহলে ঈমান চলে যাবে ।

Spread the love

Leave a Comment