ঘরে সুখ শান্তিতে ভরে যাবে, সুধু ১০ টি কাজ করলে ৷

পরম করুনাময় ও দয়ালু মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি । সমস্ত প্রসংশা একমাত্র তাঁরই জন্য এবং অগণিত দরুদ ও সালাম হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর বর্ষিত হোক ।

ধন-সম্পদ যতই থাকুক যদি মনে শান্তি না থাকে তাহলে সেই ধনসম্পদের কোন মূল্য নেই । অল্প উপার্জনেও সুখ শান্তি ভোগ করা যায় যদি সত্য পথের পথিক হয় আরা অনেক সময় বেশি উপার্জন করেও সুখ-শান্তি হারাই যদি ভুল পথের পথিক হয় ।
প্রিয় দর্শক মানুষ ধনী হোক অথবা গরিব সকলেই চাই একটু শান্তিতে থাকতে, পরিবারের সঙ্গে আনন্দে জীবনের দিনগুলো কাটাতে ।

আজ ১০ মূল্যবান কথা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব সেইগুলি যদি নিজের জীবনে বাস্তবায়িত করতে পারেন ইনশাআল্লাহ সুখ শান্তি আপনার মৃত্যু পর্যন্ত এবং তার পরেও সঙ্গী হয়ে থাকবে এবং দুনিয়া ও আখেরাতের অগণিত কল্যাণ লাভ করতে পারবেন । একটু ধর্য্য ধরে মনোযোগ সহকারে কথাগুলি শ্রবণ করুন ।

সেই মূল্যবান কথা গুলি হল
(১) আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করা ।
আল্লাহ পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টি করেছেন এবং মানুষকে সঠিক পথের দিশা দিতে যুগে যুগে নবী ও রাসূল পাঠিয়েছেন । আমরা এমন এক নবীর উম্মত যিনি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব , তিনার আগমনের পর নবুওয়াতের দরজা বন্ধ হয়ে গেছে । পৃথিবীর জমিনে
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য ছাড়া আমাদের জন্য আর কোন পথ নেই । আল্লাহ তায়ালা সারা জাহানের রব আর তার প্রিয় হাবিব হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হলেন সারা জাহানের জন্য রহমত ।
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কারি, অর্থ সম্পদের লোভে কোন পাপ কাজ আঞ্জাম দিতে পারেনা কারণ প্রয়োজনের বেশি দুনিয়াবী সম্পদের প্রতি তাদের লোভ নেই । তারা চাই জীবনের সুখ-শান্তি ও আখেরাতের কল্যাণ ও আল্লাহর সন্তুষ্টি । জীবনের চলার পথে সঠিকভাবে যদি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করা যায় তাহলে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ কদমে চুমবে ।

২- আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা :-
আল্লাহ তায়ালা অগণিত নিয়ামত আমাদেরকে দান করেছেন ৷ যেদিকে তাকাই শুধু আল্লাহর নিয়ামত দেখতে পাই,হাত,কান, নাক, মুখ, চোখ, সহ শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আল্লাহর নিয়ামত, আল্লাহর নেয়ামত গণনা করে শেষ করার মতো ক্ষমতা কারো নেই । আল্লাহর নিয়ামত ছাড়া কেও একমুহূর্ত বাচতে পারবে না ৷ তাই বেশি বেশি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে হবে । আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করলে আল্লাহ বান্দার উপর খুশি ও সন্তুষ্ট হন ৷ তাই আল্লাহর নেয়ামত উপভোগ করার পর আমরা শুকরিয়া আদায়ার্থে নিয়মিত আলহামদুলিল্লাহ বলব ।

৩- ধৈর্য্য :- ধৈর্য হলো কাঁটাযুক্ত গাছ কিন্তু তার ফল অনেক মিষ্টি ।মানুষের জীবনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম বিপদ নেমে আসে এবং অসংখ্য পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয় । সেই সময় অধৈর্য্য না হয়ে ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে ৷ ধৈর্যই যেকোন সমস্যার সমাধান ।
আল্লাহ তায়ালা ধৈর্য ধারণকারীদের পছন্দ করেন । আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল এবং দুঃখ-কষ্ট ও বিপদের সময় ধৈর্য মানুষের জীবনে কল্যাণ বয়ে আনে ।

৪- ক্ষমা চাওয়া :-
মানুষ গুনাহ করবে এটা তার বৈশিষ্ট্য তবে উত্তম ব্যক্তি হলো সেই যে গুনাহ করার পর ভুল বুঝতে পেরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়বে । গুনহা করার পর যদি ক্ষমা না চাওয়া হয় তাহলে সেই গুনহা মাথার ওপরে ছায়ার মতো ঘুরে বেড়াই আর চলার পথে বিভিন্ন বিপদ ও সমস্যা বয়ে আনে । তাই জীবনে চলার পথে যদি কোন প্রকার গুনাহ হয়ে যায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর দরবারে তওবা করে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে ৷ আল্লাহ ক্ষমা করতে পছন্দ করেন ।

৫- ভালো কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা ।
প্রত্যেক ভালো কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম পাঠ করতে হবে । বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পাঠ করে কাজ শুরু করলে আল্লাহ তায়ালা সেই কাজে বরকত দান করেন ।

৬- দুয়া :-
দুয়া হল এবাদতের মগজ ৷ ফলে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যানের জন্য আল্লাহর কাছে দুয়া চাইতে হবে ৷ দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ লাভের শ্রেষ্ট একটি দুয়া হল- “রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও আ ফিল আখিরাতি হাসানাতাও অ কিনা আযাবান নার”

৭- স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে সু সম্পর্ক :-
স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে গভীর সম্পর্ক গড়তে হবে ৷ স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা সম্পর্ক যত গভীর হবে সংসারে আল্লাহর রহমত তত বেশি বর্ষিত হবে ৷

৮ – মা ও বাবাকে ভালোবাসা:- মা ও বাবা কে ভালোবাসতে হবে এবং তাদের খিদমাত করতে হবে এবং তাদের দোয়া নিতে হবে ৷ মা ও বাবাকে খুশি রেখে জীবন যাপন করতে পারলে ইনশাআল্লাহ রহমত বরকতে ঘর ভরে যাবে ।

(৯) অহংকার মুক্ত হতে হবে ।
একজন অহংকারী কখনো সাফল্য পেতে পারে না, কখনো সে মানুষের কাছেও ভাল হতে পারে না, অহংকারী ব্যক্তিরা সর্বদাই দুশ্চিন্তার শিকার হয় । আল্লাহ তাআলা অহংকারীকে পছন্দ করেন না ।
তাই মন থেকে চিরতরে হিংসা ও অহংকার দূর করতে হবে ।

(১০) গীবত বর্জন করতে হবে ।
কারো অনুপস্থিতিতে তার বদনাম করাকেই সাধারণত গীবত বলা হয় । গীবত করা মৃত ভাইয়ের মাংস খাওয়ার সমান যা খুবই জঘন্য, গীবত সম্পূর্ণরূপে হারাম । গীবতকারীর সংসারে বালা মুসিবত নেমে আসে ।
জীবনের সুখ-শান্তি চাইলে চিরতরে গীবত বর্জন করতে হবে ।

এই উপদেশগুলো যদি জীবনে বাস্তবায়িত করতে পারেন ইনশাআল্লাহ সুখ-শান্তিতে আপনার ঘর ভরে যাবে ।আল্লাহ যেন আমাদের বেশী বেশী আমল করার তৌফিক দান করেন আমীন সুম্মা আমীন ।

জান্নাতের বর্ণনা জানতে এখানে ক্লিক করুন

Spread the love

Leave a Comment