লেখক আরিফ আজাদের ভ্রষ্টতা

লেখক আরিফ আজাদের ভ্রষ্টতা

হাদিসের নামে দিনের পর দিন জালিয়াতী করেই যাচ্ছে এক শ্রেণির মানুষ । হাদিসের সাথে কিছু পেট বানানো কথা যুক্ত করে অনেক লেখব দিন রাত বই লিখে চলেছে । তাদের মধ্যে একজনের নাম যুক্ত করা যেতে পারে,আরিফ আজাদ ।

এরা কি জানে না যে, সালামাহ ইবনু আক্ওয়া‘ (রাঃ) বলেনঃ আমি নবী (ﷺ) কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি আমার উপর এমন কথা আরোপ করে যা আমি বলিনি, সে যেন জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নেয়।’ (সহীহ বুখারী ১০৯)

আরিফ আজাদ সাহেব “নবি-জীবনের গল্প” বইয়ের ২৫ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, আলি (রাঃ) ভালােবাসা আর বিশ্বাসের শক্তিটুকু অনুধাবন করতে পারলেন নবিজি (ﷺ)। তিনি মৃদু হেসে বললেন, “এই শব্দগুলো কোথায় লেখা আছে আমাকে একটু দেখাও। আমি নিজ হাতে তা মুছে দিচ্ছি।”

যেহেতু মুহাম্মাদ (ﷺ) লেখা পড়তে জানতেন না, সুতরাং সন্ধিনামা থেকে নিজের নাম মুছতে হলে কেউ একজনকে তা দেখিয়ে দিতে হবে। আলি (রাঃ) নবিজি (ﷺ)কে শব্দদ্বয় দেখিয়ে দিলে তিনি নিজ হাতে তা মুছে দেন।

বই এর স্ক্রিনশট

কোথায় পেলেন এমন রেওয়ায়েত! সহিহ বুখারীতে বর্ণিত উক্ত ঘটনার কোন অংশেই তো এমন কোন লেখা পেলাম না, বরং “তিনি লিখলেন” বলা আছে, তাহলে কি তিনি পড়তে পারতেন না, কিন্তু লিখতে পারতেন, বিষয়টা কি এমন! কোন হৃদয়বান ব্যক্তি যদি পেয়ে থাকেন, কমেন্টে জানান।

সহিহ বুখারীর রেওয়ায়েত অনুযায়ী সঠিকটা তুলে ধরা হল-

যিলকদ মাসে নবী (ﷺ) উমরাহ্‌’র উদ্দেশ্যে বের হলেন। কিন্তু মক্কাবাসীরা তাঁকে মক্কা প্রবেশের জন্য ছেড়ে দিতে অস্বীকার করল। অবশেষে এই শর্তে তাদের সঙ্গে ফয়সালা করলেন যে, তিনদিন সেখানে অবস্থান করবেন। সন্ধিপত্র লিখতে গিয়ে মুসলিমরা (মাওলা আলী (রাঃ) লিখলেন, এ সন্ধিপত্র সম্পাদন করেছেন, ‘আল্লাহ্‌র রসূল মুহাম্মাদ’ (ﷺ)।

তারা (মুশরিকরা) বলল, ‘আমরা তাঁর রিসালাত স্বীকার করি না। আমরা যদি জানতাম যে, আপনি আল্লাহ্‌র রসূল তাহলে আপনাকে বাধা দিতাম না। তবে আপনি হলেন, ‘আবদুল্লাহ্‌র পুত্র মুহাম্মদ।’ তিনি বললেন, ‘আমি আল্লাহ্‌র রসূল এবং ‘আবদুল্লাহ্‌র পুত্র মুহাম্মদ।’

অতঃপর তিনি আলী (রাঃ)–কে বললেন, ”রাসূলুল্লাহ”(আল্লাহ্‌র রসূল) শব্দটি মুছে দাও। তিনি বললেন, না। আল্লাহর কসম, আমি আপনাকে কখনো মুছব না।’

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তখন চুক্তিপত্রটি নিলেন (এবং নিজ হাতে তা মুছে দিলেন এবং লিখলেন, ‘এ সন্ধিপত্র মুহাম্মদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ সম্পন্ন করেন- খাপবদ্ধ অস্ত্র ব্যতীত আর কিছু নিয়ে তিনি মক্কায় প্রবেশ করবেন না। মক্কাবাসীদের কেউ তাঁর সঙ্গে যেতে চাইলে তিনি বের করে দিবেন না। আর তাঁর সঙ্গীদের কেউ মক্কায় থাকতে চাইলে তাঁকে বাধা দিবেন না।’

রেফারেন্সঃ

  • সহিহ বুখারী ২৬৯৮
  • সহিহ বুখারী ২৬৯৯

সাহাবায়ে কেরামের আদব কেমন ছিল দয়াল নবীজি (ﷺ)এর প্রতি! কিন্তু বড়ই আফসোসের বিষয়, ঐ নবী (ﷺ) এর এমন উম্মতও আছে যারা তাঁকে নিরক্ষর, লিখতে পড়তে জানেন না- প্রমাণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে । (নাউজুবিল্লাহ)। হায়! ওরা যদি বুখারীটা হলেও ভাল করে পড়ত তাহলে বুঝতে পারত যে, আমাদের নবী (ﷺ) লেখতে পারতেন এবং পড়তে পারতেন।

জনৈক কবির ভাষা,

“Bina ishq e nabi jo padte hai bukhaari
Aata hai bukhaar unko aati nahi bukhaari”

অর্থঃ নবীজির ভালবাসা ছাড়া যারা বুখারী পড়ে,তারা জ্বরে (বুখার) আক্রান্ত হয়ে যায় আর বুখারী বুঝতে পারে না।

মোহঃ রাকিব আত্তারী

শব্দ সংযোজন- আব্দুল আজিজ কাদরী

এবার এটা পড়ুন-নবীজি (ﷺ) কি আমাদের মত মাটির মানুষ নাকি নূরের মানুষ?

Spread the love

Leave a Comment