YouTube (ইউটিউব) এর ইনকাম হালাল নাকি হারাম?

YouTube (ইউটিউব) এর ইনকাম

প্রশ্ন নং১৩০-আসসালামু আলাইকুম ও রহমাতুল্লাহ, হুজুর আমি আনসারুল কলকাতা থেকে একটি মাসআলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই তা হল-”YouTube (ইউটিউব) এর ইনকাম হালাল নাকি হারাম”? । একাকজন হুজুর একাক রকম কথা বলেন তাই আমি সন্দেহের মধ্যে রয়েছি । আমাদের মত লক্ষ লক্ষ বেকার ছেলে You Tube এর Income দিয়ে সংসার চালাই । তাই সঠিক ভিষয়টি পরিস্কার ভাবে আপনার কাছে জানতে চাই । দয়া করা ইসলাম এর বিধান ও যুক্তি সামনে রেখে উত্তর দেবেন ।

উত্তরঃ-

বর্তমানে অসংখ্য বেকার ছেলে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে অথবা কেউ Blog তৈরি করে লেখালেখি করে,লক্ষ লক্ষ টাকা Earn বা উপার্জন করছে এ কথা সত্য । এবং তাদের মধ্যে অসংখ্য মুসলিম bloggers ও YouTubers দের মাথার মধ্যে একটা প্রশ্ন খুব বেশি ঘোরাঘুরি করে তা হল, ইউটিউবের ইনকাম হালাল নাকি হারাম?

তারা অনেক জায়গায় প্রশ্ন করেছে কিন্তু সঠিক উত্তর পাইনি । উত্তর দাদারা কথাকে চেপে রেখে সাইট কেটে বেরিয়ে গেছে ।

আজকের এই প্রবন্ধে খুবই সুন্দর ভাবে তথ্যগুলি তুলে ধরব । এরপর আপনার সমস্ত কনফিউশন দূর হয়ে যাবে । এ বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে হলে ধৈর্য ধরে লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন, একটু পড়ে চলে গেলে কিছুই বুঝতে পারবেন না । খুবই কষ্ট করে আপনাদের সুবিধার্থে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, যাতে করে আপনারা সঠিক তা জানতে পারেন ।

YouTube ও Blog থেকে কয়েক ভাবে ইনকাম করা যায়

  • Affiliate করে
  • sponsor করে
  • online course বিক্রি করে
  • Online product বিক্রি করে
  • AdSense যুক্ত করে । ইত্যাদি

প্রত্যেকটা বিষয়ে আলোচনা করতে গেলে প্রবন্ধ অনেক বড় হয়ে যাবে । যেহেতু AdSense যুক্ত করে বেশিরভাগ ইউটিউবার বা ব্লগার ইনকাম করে তাই এ বিষয়টি আজকের লেখনির মাধ্যমে পরিষ্কার করে দিতে চাই ।

AdSense কাকে বলে ?

অ্যাডসেন্স (ইংরেজি: AdSense) গুগল পরিচালিত একটি ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন। এটি মূলত একটি লাভ-অংশিদারী প্রকল্প,যার দ্বারা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা যায়।

AdSense থেকে কিভাবে অর্থ উপার্জন হয় ?

এডসেন্সের কাজ হল, অনেক রকমের ব্লগ, ওয়েবসাইট, ইউটিউব ভিডিও এবং app এ বিজ্ঞাপন দেখানো এবং যাদের ব্লগ বা ভিডিও গুলিতে বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে তাদের কে কিছু টাকা দেওয়া। কিন্তু, এই বিজ্ঞাপন যেগুলি আমাদের ওয়েবসাইট বা ভিডিওতে দেখানো হয় সেগুলির জন্য গুগল এডভারটাইজার (advertiser) কাছ থেকে আগেই টাকা নিয়ে নেয় এবং সেই টাকার একটা অংশ ব্লগ বা ভিডিও মালিকদের বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য দেওয়া হয় ।

YouTube বা Blog এর সঙ্গে AdSense যুক্ত করে টাকা ইনকাম করা যায় একথা পরিষ্কার বুঝা গেল ।

এবার YouTube বা Blog এর সঙ্গে AdSense যুক্ত করে উপার্জন করা হালাল নাকি হারাম এ বিষয়টি একটু পরিষ্কার করে তুলে ধরতে চাই ।

এ বিষয়ে অসংখ্য মুফতি, মাওলানা ও বড় বড় ইসলামিক স্কলার দের প্রশ্ন করা হলে । একেক জন একেক রকম উত্তর প্রদান করেছেন ।

  • কেও বলেছেন ভালো ভিডিও বানালে উপার্জন হালাল ।
  • কেও সরাসরি বলেছেন হারাম কারণ তাতে অপছন্দনীয় বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখানো হয় ।
  • কেও বলেছেন কিছুটা হালাল কিছুটা হারাম । ইত্যাদি

আমি সেই সমস্ত সম্মানিত ওলামায়ে একরামদের জন্য কিছু প্রশ্ন প্রবন্ধের শেষে তুলে ধরব সেগুলোও আপনাদেরও জানা দরকার । তার উত্তর খুঁজে বের করতে পারলে আপনিও আলাদা এক পথে নতুন উত্তর খুঁজে পাবেন ।

আসুন এবার আপনাদের সামনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরি তাহলে নিজে থেকে আপনারা বুঝতে পারবেন এটা হালাল নাকি হারাম । প্রথমে ইউটিউবের এলগরিদম ও কিছু নিয়মকানুন সম্পর্কে জানতে হবে সেটা কেমন ভাবে কাজ করে ।

(১) মূলত ইউটিউব এডসেন্সের মাধ্যমে যে অ্যাড দেখায় তা নির্ভর করে ভিডিও টাইটেল এর উপর । আপনার ভিডিওর কীওয়ার্ড যেমন হবে সে রিলেটেড ইউটিউব অ্যাড চালাবে । আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরা হলো যাতে করে সহজে বুঝতে পারেন ।

(ক) যদি কেও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয় ভিডিও বানায় । তাহলে তার ভিডিওতে অধিকাংশ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় ।

(খ) যদি কেউ টেকনিক্যাল ভিডিও বানায় তাহলে তার চ্যানেলে টেক বিষয়ক অধিকাংশ বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় ।

(গ) আর যারা সাধারণ শিক্ষামূলক (educational) ভিডিও বানিয়ে থাকে তাদের চ্যানেলে সাধারণ বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় ।

এরকম অসংখ্য ক্যাটাগরি আছে ইউটিউব ক্যাটাগরি অনুযায়ী অ্যাড/বিজ্ঞাপ দেখিয়ে থাকে ।

(২) You Tube (ইউটিউব) টার্গেটেড অডিয়েন্স কে তাদের মন মত এড দেখায় । ইউটিউব ভিউয়ার্সদের আগ্রহ অনুযায়ী বিজ্ঞাপন দেখায়। মানে আপনি কি কি বিষয়ে মোবাইলের সার্চ করেন, কি কি বিষয়ে ভিডিও দেখেন, কোন কোন প্রোডাক্ট আপনার পছন্দ যা আপনি অনলাইনে শপিং করেন বা সার্চ করেন । এসবের উপর ডিপেন্ড করে ইউটিউব আপনার মোবাইলের সার্চ হিস্টরি অনুযায়ী এড দেখিয়ে থাকে । আপনি যদি ভালো কিছু দেখেন তাহলে ভালো অ্যাড দেখতে পাবেন আর খারাপ কিছু দেখেন তাহলে খারাপ অ্যাড দেখতে পাবেন । এর জন্য আপনি সম্পূর্ণরূপে দায়ী যে ভিডিও বানিয়েছে সে দায়ী হবে না ।

(৩) বর্তমানে আপনি YouTube ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখান অথবা না দেখান এটা আপনার ব্যাপার তবে আপনি যদি বিজ্ঞাপন না দেখান তাহলে YouTube নিজে থেকে তাদের মন মত বিজ্ঞাপন দিয়ে সম্পূর্ণ টাকাটা তারা রেখে দেবে । ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করলে অ্যাড দেখানো কম্পালসারি করে দেওয়া হয়েছে । তাই অ্যাডের টাকা আপনাকে নিতে হবে না হলে ইউটিউব কে দিতে হবে, যদি হারাম হয় তাহলে নিজে খাওয়া বা কাউকে খাওয়ানো একই ব্যাপার নয় কি? । এ বিষয়ে আপনাদের মতামত কি?

(৪) Google কোম্পানি AdSense এর মধ্যে কিছু সুযোগ-সুবিধা রেখেছে আপনাদের জন্য । যাতে করে আপনি নিজের মন মত বিজ্ঞাপন পছন্দ করে নিতে পারেন । এ বিষয়টা একটু লাইভ আপনাকে দেখাতে চাই, যাতে আপনারা পরিষ্কার বুঝতে পারেন ।

নিচের ভিডিটি ৫মিনিট পর থেকে দেখুন পরিস্কার বুঝতে পারবেন ।

YouTube Channel….

ইউটিউবে ভিডিও বানাতে যথেষ্ট সময় লাগে । কনটেন্ট লেখা, রেকর্ডিং করা, ভিডিও এডিটিং, ভিডিও থামনেল ইত্যাদি রেডি করতে অনেক সময় লেগে যায় । শিক্ষামূলক তথ্যে ভরা ভিডিও বানাতে ১দিন মত সময় লাগে । কিছু কিছু ভিডিও এমন আছে যা বানাতে এক সপ্তাহের বেশি লেগে যায় । এতটা সময় নষ্ট করে নিয়মিত কেউ ফ্রিতে ভিডিও আপলোড দিতে পারবে না । যেহেতু সময়ের মূল্য আছে নিজের উপার্জনের দরকার আছে । তাই সময়ের মূল্য হিসেবে কিছু অর্থ পেলে সে সবকিছু ছেড়ে মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারবে ।

বর্তমানে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ ইসলামিক ও বিভিন্ন শিক্ষামূলক ভিডিও ইউটিউবে আপলোড হয়, এর দ্বারা কোটি কোটি মানুষ উপকৃত হয় । যদি ভিডিও বানানোর জন্য সময়ের মূল্য না পাওয়া যায়, তাহলে লক্ষ লক্ষ ভিডিও থেকে ১০০ থেকে ২০০ ভিডিও আপলোড হতে শুরু হবে ।

পৃথিবীর যত রকমের টিভি চ্যানেল, রেডিও সেন্টার, বড় বড় সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানি আছে । প্রায় সবগুলোই বিজ্ঞাপনের উপর নির্ভর করে বেঁচে আছে। লক্ষ লক্ষ কর্মী সেখানে কর্ম করে উপার্জন করছে । যদি বিজ্ঞাপন বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়া যায় তাহলে পৃথিবী থেকে এ সমস্ত গুলোই উঠে যাবে । অমুসলিমদের জন্য বাধ্যবাধকতা নেই ঠিকই কিন্তু মুসলিমদের জন্য অবশ্যই কিছু নিয়মকানুন মানার আছে । সে বিষয়ে একটু পরে আলোচনা করছি ।

প্রিয় পাঠক প্রত্যেক মানুষের জীবনে অর্থের প্রয়োজন তাই তাকে উপার্জন করতে হয় । ধর্মীয় কাজের পাশাপাশি তার জীবন চালানোর জন্যও কর্ম কারা জরুরী । পরিবারের জন্য উপার্জন করাটাও একটি ইবাদত । অর্থ টাকা ছাড়া পৃথিবীতে চলা অসম্ভব ।

মসজিদে আজান দিয়ে, ইমামতি করে, ধর্ম প্রচার করে টাকা নেওয়া বৈধ নয় । তবে যখন মানুষ এ সমস্ত কাজের সঙ্গে যুক্ত হয় তখন নিজের পরিবারের জন্য উপার্জনের সুযোগ পাই না, আর সরকারিভাবে প্রয়োজন মত হাদিয়া প্রদান করা হয় না । তাহলে তাদের সংসার চলবে কিভাবে ? তাই তাদের সময়ের মূল্য হিসেবে কিছু অর্থ দেওয়া হয় । যদি পুরোপুরি ভাবে হাদিয়া দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে,৯৯% মসজিদে ইমাম সাহেব ও মুয়াজ্জিন খুঁজে পাওয়া যাবে না । জলসা মাহফিল করলে বক্তা খুঁজে পাওয়া যাবে না ।

প্রচারের এক বৃহত্তম প্ল্যাটফর্ম হল YouTube, যার দ্বারা সমস্ত পৃথিবী জুড়ে ইসলামের বাণী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে খুব সহজে, অমুসলিমদের কাছেও সহজে ইসলামের বার্তা পৌঁছানো যাচ্ছে । এবং যারা এ কাজের সঙ্গে যুক্ত তারা অনেক সময় ব্যয় করছে । তাই যদি কিছু নিয়ম মেনে YouTube এ বিজ্ঞাপন দেখিয়ে উপার্জন করে তাহলে সমস্যা কোথায়?

স্ত্রী খারাপ ব্যাবহার করলে স্বামী কি করবে ?

তাবিজ ব্যবহার করা জায়েজ কিনা?

ইউটিউব এর ইনকাম হালাল নাকি হারাম?

ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে, ব্লগ লেখালেখি করে তাতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ইনকাম করা জায়েজ । সেই টাকা সম্পূর্ণ হালাল হবে । তবে এর জন্য কিছু শর্ত পালন করতে হবে ।

(১) এমন ভিডিও বানাতে হবে যাতে ইসলামী শরীয়াতে নাজায়েজ বলে গণ্য না হয় । ইসলামিক অথবা যাবতীয় শিক্ষামূলক ভিডিও বানাতে হবে যেন, মানুষ উপকার পায়, ভালো কিছু জানতে পারে ও শিখতে পারে । আজে-বাজে ভিডিও দেখিয়ে মানুষের সময় নষ্ট করা মোটেও জায়েজ নই ।

(২) অবৈধ বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে হবে । যা আমি একটু আগে আপনাদের ভিডির মাধ্যমে দেখালাম ।

(৩) থামনেলে এক লেখা আর ভিডিওর মধ্যে আর এক দেখিয়ে ধোকা দেওয়া জায়েজ নেই ।

(৪) নিজের বানানো ভিডিও হতে হবে অথবা কারো ভিডিও নিলে তার অনুমতি নিতে হবে । তবে কেউ যদি সাধারণভাবে অনুমতি দিয়ে থাকে তাহলে তার ভিডিও নেওয়া যেতে পারে ।

(৫) বড় বড় কোম্পানিগুলো বেশিরভাগ অমুসলিমদের তাই তারা অনেক সময় নারীদের দ্বারা বিজ্ঞাপন করিয়ে থাকে । বিজ্ঞাপনকারী নারী যদি অর্ধলঙ্গ হয় বা কোন সেক্সচুয়াল ভাব নিয়ে বিজ্ঞাপন করে । তাহলে সেটা এডসেন্সের মধ্যে গিয়ে সেক্সচুয়াল বিজ্ঞাপন বন্ধ করার অপশন রয়েছে যা পূর্বে দেখিয়েছি সেখান থেকে বন্ধ করে দিতে হবে ।

আর যদি সাধারণ ভাবে নারী দ্বারা বিজ্ঞাপন দেখানো হয় আর কোন ভিউয়ারসের সামনে চলে আসে তাহলে সেই ক্ষেত্রে ভিউয়ারস তাই করবে, যা করে বাজার ঘাটের বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞাপন দেখে, অফিস আদালতে নারী কর্মী দেখে, বিমানে নারী Air Hostess দেখে, ব্যাংকে নারী কর্মী দেখে, পুলিশ স্টেশনে নারী পুলিশ দেখে, স্কুল কলেজ ও ভার্সিটিতে নারী শিক্ষিকা দেখে, হোটেল রেস্টুরেন্ট ও বিভিন্ন শপিং মলে নারী কর্মী দেখে, বিভিন্ন অফিসের সামনে, সোশ্যাল মিডিয়াতে, বাসস্ট্যান্ডে, ট্রেন স্টেশনে, এয়ারপোর্টে, ইত্যাদি জায়গায় বিজ্ঞাপন দেখে । এ সমস্ত জায়গায় যা করে ভিডিওতে বিবেক বিরোধী বিজ্ঞাপন দেখেও সেই তাই করবে।

রাস্তাঘাটে বেরোলে অনেক বেগানা নারী দেখা যায়, তাই বলে কি রাস্তাঘাটে বেরানো হারাম হবে? নাকি নিজেকে বেছে চলতে হবে? অবশ্যই প্রয়োজন হলে বেরোতে হবে এবং শরীয়তের দেখানো পথে পথ চলতে হবে ।

(৫) YouTube এর ভিডিও বানাতে গিয়ে নামাজ অন্যান্য এবাদত যেন ছুটে না যায় । সে দিকটা অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে ।

এ সমস্ত বিষয়গুলি লক্ষ্য রাখলে আপনার YouTube এর আর্নিং হালাল হবে । ইনশাআল্লাহ

এর পরেও যদি আপনার মনে কিন্তু থেকে থাকে তাহলে উপার্জিত টাকা থেকে ১০-২০% মানব সেবায়, এতিমখান বা চারিটিতে দিয়ে দিতে পারেন।

যারা ইউটিউবের ইনকাম কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা না করে সরাসরি হারাম বলে তাদের কাছে কিছু প্রশ্ন-

(১) যে সমস্ত জায়গায় নারী থাকে, বা নারীর বিজ্ঞাপন থাকে, যে সমস্ত শপিংমলে নারী কর্মী থাকে, যে সমস্ত প্লেনে নারী হোস্টেস থাকে ইত্যাদি অনেক অনেক জায়গায় পর্দাকৃত ও পর্দা ছাড়া বিভিন্ন নারী পাবেন । তাহলে সেই সমস্ত জায়গায় প্রয়োজনে যাওয়া কি হারাম হবে? যদি হারাম হয় তাহলে এর বিকল্প পদ্ধতি আপনার কাছে কি আছে?

(২) ইউটিউবের নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক ভিডিওতে বিজ্ঞাপন চলবে , এর দ্বারা উপার্জিত অর্থ ভিডিও তৈরি কারী ব্যক্তি নিবে, না হলে YouTube নিয়ে নেবে । যদি হারাম হয় তাহলে দুই ক্ষেত্রেই হারাম হবে ।
আর বর্তমানে YouTube এর মাধ্যমে ইসলামিক জ্ঞান লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি মানুষের কাছে পৌছাতে ভিডিও বানানো অবশ্যই জরুরি ।ইউটিউব এর উপার্জন নিজে নিলেও হারাম অন্যকে দিলেও হারাম তাহলে এক্ষেত্রে কি করতে হবে?

(৩) ইন্টারনেট খুললেই বিজ্ঞাপন দেখা যায় । যে কোন ব্রাউজার, বা সোশ্যাল মিডিয়া বিজ্ঞাপন মুক্ত নয় । এছাড়া নিজের ইচ্ছার বাইরে অসংখ্য খারাপ ভিডিও চলে আসে, যা বন্ধ করার অপশন নেই। এই ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহার করা কি বর্জন করতে হবে? নাকি আপনাদের কাছে কিছু বিকল্প রাস্তা আছে?

(৪) দেশের সরকার বিভিন্ন পন্থায় উপার্জন করে, অসংখ্য অবৈধ পন্যের ব্যবসার টাকা সরকারের খাতে জমা হয় । তাহলে কি সরকারের সাহায্য নেওয়া বা সরকারি চাকরি করে টাকা নেওয়া হারাম হবে? নাকি আমি যে কাজটি করছি সেটি হালাল না হারাম সেটা দেখতে হবে?

(৫) হালাল পণ্যের বিজ্ঞাপন যদি কোন নারী দ্বারা করানো হয় তাহলে কি সেই পণ্য ক্রয় করা হারাম হবে?

(৬) বিভিন্ন অফিস আদালত, শিক্ষা কেন্দ্র, ব্যাংক, পোস্ট অফিস, পঞ্চায়েত, পৌরসভা, এয়ারপোর্ট, রেল স্টেশন, বাস স্টেশন, শপিং মল, কসমেটিকের দোকান, ইত্যাদি হাজারো জায়গায় নারীরা কর্মরত রয়েছে । তাহলে সেখানে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী যাওয়া কি হারাম হবে?

এমন অসংখ্য প্রশ্ন রয়েছে । যার উত্তর দেওয়া খুবই কঠিন । ফতোয়া কি শুধু ইউটিউবের জন্য আর অন্যান্য বিষয়গুলি চোখে পড়ে না?

যারা সরাসরি কোন ব্যাখ্যা ছাড়া YouTube এর ইনকামকে হারাম বলেন তাদের কাছ থেকে এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষায় থাকলাম । আমাদের সাইটের এবাউট সেকশনে ইমেইল আইডি দেওয়া আছে উত্তরগুলি লিখে পাঠাবেন অপেক্ষায় থাকবো ।

সমস্ত আলোচনা সামনে রেখে এই সমাধানে পৌঁছানো যেতে পারে যে, সব জায়গাতেই সমস্যা রয়েছে সে সমস্যার মধ্যেও আমাদেরকে সাবধানে চলাফেরা করতে হয় তেমনভাবে ইউটিউব এর ক্ষেত্রে শর্ত মেনে কাজ করলে তার উপার্জন নিঃসন্দেহে হালাল হবে ।

প্রিয় পাঠক আপনারাও নিজের মতামত কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন । যাদি আপনার মতামত উপযুক্ত হয় তাহলে, আমরা এই প্রবন্ধের মধ্যে যুক্ত করব । ইনশা আল্লাহ

YouTube (ইউটিউব) এর ইনকাম হালাল নাকি হারাম? এ সম্পর্কে আলোচনা শেষ । নিচে কিছু প্রশ্ন উত্তর দেওয়া হল দেখুন ।

তথ্য সংগ্রহ করেছেন- আব্দুল আজিজ কাদরী

এবার পড়ুন-

FAQ

  1. Q: ইউটিউব এর ইনকাম দ্বারা ওমরা বা হজ্ব করা যাবে কি?

    An: প্রবন্ধের মধ্যে হালাল ভাবে উপর্জন করার সঠিক পদ্ধতি তুলে ধরা হয়েছে । আপনি সেগুলো মেনে উপার্জন করতে পারলে সেই অর্থ হালাল হবে । আর সেই টাকাতে হজ্বও শুদ্ধ হবে ।

  2. Q: গেম খেলে টাকা আয় করা কি হারাম?

    An: গেম খেলার মাধ্যমে উপার্জন হারাম হবে ।

  3. Q: ওয়েব ডিজাইন করে ইনকাম করা কি হারাম?

    An: ওয়েব ডিজাইন করে উপার্জন করা হালাল হবে যদি আপনি হারাম কাজের জন্য না বানান ।

  4. Q: আমার ফান ইউটিউব চ্যানেল আছে তার ইনকাম কি হালাল হবে ?

    An: মানুষের মূল্যবান সময় ফান বা আজে বাজে ভিডিও দেখিয়ে নষ্ট করা জায়েজ হবে না । আপনাকে শিক্ষা মূলক ভিডিও বানাতে হবে যাতে মানুষ উপকার লাব করে । উপরে প্রবন্ধের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে পড়ে দেখতে পারেন ।

এবার এটি পড়ুন জ্ঞান বাড়বে –ভালো কাজ করে অমুসলিম কি জান্নাতে যাবে ?

Spread the love

Leave a Comment