ইয়াওমে আরাফার গুরুত্ব ও ফযীলত

ইয়াওমে আরাফার গুরুত্ব ও ফযীলত

যিলহজ্ব মাসের গুরুত্বপূর্ণ একটি দিবস হলো ৯ তারিখ। হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী- ইয়াওমু আরাফা এ দিনটি হজ্বের মূল দিন। আরাফার ময়দানে হাজ্বী সাহেবানের উকূফ(অবস্থান) এ দিনেই হয়ে থাকে। মহান আল্লাহ্ তা’আলা এ দিনকে বিশেষ সম্মান দান করেছেন।

এ দিনে বান্দার দিকে রবের রহমতের জোয়ার প্রবলবেগে উৎসারিত হয়। অসংখ্য বান্দাকে তিনি ক্ষমা করে থাকেন এ দিনে। উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ)) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন–

আরাফার দিনের মতো আর কোনো দিন এত অধিক পরিমাণে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় না। আল্লাহ্ তা’আলা দুনিয়ার নিকটবর্তী হন এবং বান্দাদের নিয়ে ফিরিশতাদের নিকট গর্ব করেন। আল্লাহ্ বলেন, কী চায় তারা? (সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩৪৮)

হযরত জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত আরেক বর্ণনায় রয়েছে- আল্লাহ্ তা’আলা নিকটতম আসমানে আসেন এবং পৃথিবী বাসীকে নিয়ে, আসামানের অধিবাসী (ফিরিশতাদের) সামনে গর্ব করে বলেন,দেখ তোমরা- আমার বান্দারা উস্কোখুস্কো চুলে, ধুলোয় মলিন বদনে, রোদে পুড়ে দূর-দূরান্ত থেকে এখানে সমবেত হয়েছে। তারা আমার রহমতের প্রত্যাশী। অথচ তারা আমার আযাব দেখেনি। ফলে আরাফার দিনের মত আর কোনো দিন এত অধিক পরিমাণে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় না। (সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৩৮৫৩)

দ্বীন-ইসলামকে পূর্ণতার ঘোষণা দিয়েছেন এ দিনেই। এ দিনেই নাযিল হয়েছে কুরআনে কারীমের সর্বশেষ আয়াত

اَلْیَوْمَ اَكْمَلْتُ لَكُمْ دِیْنَكُمْ وَ اَتْمَمْتُ عَلَیْكُمْ نِعْمَتِیْ وَ رَضِیْتُ لَكُمُ الْاِسْلَامَ دِیْنًا 

আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম এবং তোমাদের প্রতি আমার নিআমত পরিপূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন মনোনীত করলাম। (সূরা মায়েদা: ৩)

রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) সাধারণত এ দশকে (৯ দিন) রোযা রাখতেন। ৪ আমল নবী কারীম (সাঃ) কখনো ছাড়তেন না। আশুরার রোযা, যিলহজ্বের প্রথম দশকের রোযা, প্রত্যেক মাসের তিন দিনের রোযা, ফজরের আগে দুই রাকাত সুন্নত নামায। (সুনানে নাসায়ী, হাদীস ২৪১৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৬৪২২)

অতএব সম্ভব হলে এ দশকে রোযা রাখার প্রতি মনোযোগ দেওয়া জরুরি। পুরো নয় দিন রোযা রাখতে কষ্ট হলে যে কয়টি সম্ভব সে কয়টি রাখতে পারি।তাতেও সাওয়াব হবে ইনশাআল্লাহ্।

আল্লাহ্ তা’আলা যেন আমাদেরকে তাওফীক দান করেন। (আমীন..)

Spread the love

Leave a Comment