উপকারী মিথ্যা
একদা এক বাদশা বাদশাহ আদেশ দিলেন, অপরাধীর প্রাণদন্ড হওয়া উচিত। এখনি লোকটিকে শূলে চড়াও।
বাদশাহ’র আদেশ অমান্য করে কে কার এত বড় সাহস আছে? আদেশ মত লোকটিকে ধরে বেঁধে নিয়ে আসা হল শূলে চড়ানোর জন্য। লোকটি কাতর অনুনয়-বিনয় করল,যাতে তাকে শূলে না চড়ানো হয়। কিন্তু, বাদশা কোন কথাই শুনলো না। লোকটি বুঝলো তার বাঁচবার আর কোনো আশা নেই । তখন সে বাদশাহে গালাগালি শুরু করল। হাত-পা ছুড়ে চিৎকার করতে লাগল। এটা ছিল শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য তার একটা প্লান ।
বাদশাহ বসে আছেন দূরে,তাই তিনি স্পষ্ট তার কথা শুনতে পাচ্ছেন না। লোকটির চিৎকার চেঁচামেচির কোনো অর্থ তিনি বুঝতে পারলেন না। পাশে বসা একজন সভাসদকে জিঙ্গেস করলেন, লোকটি কী বলতে চাই আমাকে বলো ?
সভাসদ দেখলেন ভারি বিপদ ! সত্য বললে বাদশাহ হয় তো ভয়ানক রেগে যাবেন। তাই তিনি নিজে থেকে বানিয়ে বললেন- বাদশাহ লোকটি বলছে, যে ব্যাক্তি অপরাধীকে ক্ষমা করে সে সকলের শ্রদ্ধা অর্জন করে। বাদশাহ বললেন আমিও তো সকলের শ্রদ্ধা অর্জন করতে চাই।
বাদশাহ লোকটির কথা শুনে খুব খুশি হলেন। বললেন ওকে ছেড়ে দাও। পাশেই দাড়িয়ে ছিলেন আরেক সভাসদ। প্রথম সভসদের উপর তার ছিল ভারি রাগ। তাই সে প্রতিশোধ নিয়ে চাইলো ।
সে তারাতারি বলল, বাদশাহ ঐ সভাসদ আপনাকে মিথ্যা কথা বলছে। লোকটি এ কথা বলেনি বরং আপনাকে গালাগালি দিচ্ছে। একে মুক্ত করা উচিত নয়। এই সভাসদের কথা শুনে বাদশাহ বেশ উত্তেজিত হলেন, অনেক রাগ করলেন। তখন বাদশাহ সভাসদের দিকে তাকিয়ে বললেন – ওর মিথ্যা কথা অনেকগুণে ভালো,কারণ ও মিথ্যা বলছে একটা লোকের প্রাণ রক্ষার জন্যে ।
আর তুমি সত্য কথা বলছো লোকের ক্ষতি,মৃত্যুর যেন হয় তার জন্য। তাহলে আমি কার কথা শুনবো ? ক্ষতিকর সত্যের চেয়ে উপকারী মিথ্যা আমার কাছে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। বাদশাহর কথা শুনে সভাসদগণ ধন্য ধন্য করতে লাগল।