নবীজি (ﷺ) কি আমাদের মত মাটির মানুষ নাকি নূরের মানুষ?

নবীজি (ﷺ) কি আমাদের মত মাটির মানুষনাকি নূরের মানুষ?

বাতিলপন্থীদের কয়েকটি খােড়া যুক্তির নিষ্পত্তি

.চলমান দেওবন্দীদের সপক্ষে ধোঁকা আর জাল হাদিসই প্রধান পুজি ? চলমান এ দুটি ভয়ংকর বাতিল মতবাদ তাদের দাবি নবীজি (ﷺ) আমাদের মত মাটির মানুষ । নাউযুবিল্লাহ ; কিন্তু তাদের সপক্ষে একটি সুস্পষ্ট দলিল নেই যে মহান রব বলেছেন অথবা নবীজি সাহাবিদের বলেছেন যে আমাকে মাটি দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে।

ধোঁকা নং.১ : এ বিষয়ে তারা বলে থাকেন যে মহান আল্লাহ রাসূলের জবানে ইরশাদ করিয়েছেন-

قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ “হে আমার হাবিব! আপনি বলুন আমি তােমাদের ন্যায় (আকৃতিতে) মানুষ।”(সুরা কাহাফ-১১০) – তাই বুঝতে পারলাম যে রাসূল (ﷺ) বাশার বা মানুষ ছিলেন; আর এবার আমরা দেখবাে বাশারকে কি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। মহান রব তায়ালা ইরশাদ করেন-

إِنِّي خَالِقٌ بَشَرًا مِنْ طِينٍ “আমি বাশার কে (আদমকে) বানিয়েছি কাদা মাটি থেকে।”(সুরা ছােয়াদ-৭১)

ধোঁকার দাঁতভাঙ্গা জবাবঃ ১.প্রথমত, সুরা কাহফের যে আয়াতটি তারা দলিল দেয়। শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله) তার মাদারেজুন নবুয়তের ২য় খন্ডে (ই.ফা, বা) এই আয়াতেকে কারীমাকে মুতাশাবেহাত এর অন্তর্ভুক্ত বলেছেন।

এ আয়াতের আরও অংশ রয়েছে সেটুকু তারা বলতে চায়না। যেমন- “আমার কাছে ওহী আসে তােমাদের কাছে আসে না), আর ইলাহ একজনই।” (কাহাফ-১০)তাই বুঝতে পারলাম স্পষ্ট হয়ে গেলাে তার কাছে ওহী আসে আমরা তার মতাে নয় বলেই আমাদের কাছে ওহী আসে না।

২. দ্বিতীয়ত, সূরা কাহাফের ঐ আয়াতে মহান রব রাসূল (ﷺ) কে বিনয়তা শিক্ষা দেয়ার জন্য এরুপ বলার আদেশ করেছিলেন। কারণ একমাত্র আল্লাহ পাকই রাসূল (ﷺ) এর শিক্ষক। যেমনঃ ইমাম বাগভী (رحمة الله), ইমাম জাওযী (رحمة الله), ইমাম খাযেন (رحمة الله) তাদের তাফসীরে উল্লেখ করেন- ‘‘হে হাবিব! আপনি বলুন আমি তোমাদের ন্যায় মানুষ।

সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন, আল্লাহ তা‘য়ালা স্বীয় রাসূল (ﷺ) কে বিনয়-নম্রতা শিক্ষা দিয়েছেন, যাতে তিনি সৃষ্টির উপর বড়াই না করেন। অতঃপর তিনি তাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন একথা স্বীকার করতে যে, তিনি অপরাপর মানুষের মতই।’’

সুতরাং রাসূল (ﷺ) ‘আমি তোমাদের মত মানুষ’ বলার মূল কারণ হল ‘বিনয়-নম্রতা’ প্রকাশ।

ইমাম বাগভী (رحمة الله) সহ বিখ্যাত ইমামগণ বর্ণনা করেন-

قَالَ الْحَسَنُ: عَلَّمَهُ اللَّهُ التَّوَاضُعَ )قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ -‘‘বিখ্যাত সাহাবী হযরত হাসান (رضي الله عنه) বলেন, ‘আমি তোমাদের মত মানুষ’ এই কথা দ্বারা রাসূল (ﷺ) কে বিনয়-নম্রতা শিক্ষা দেয়া হয়েছে।’’

তাই ইমাম আলূসী বাগদাদী (رحمة الله) লিখেন- المعنى ما نحن من الملائكة بل نحن بشر مثلكم في الصورة ‘‘এ অর্থ হল : আমরা (নবীরা) ফেরেস্তা নয়, বরং সূরতে আকৃতিতে তোমাদের মত মানুষ।’’ বিখ্যাত তাফসিরকারক ইমাম আবু সাউদ ইমাদী (ওফাত. ৯৮২হি.) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন- بل نحن بشرٌ مثلُكم في الصورة ‘‘বরং আমরা সূরতে তোমাদের মত বাশার বা মানুষ।’’ বুঝা গেল নবীরা আকৃতিতে আমাদের মত; প্রকৃতপক্ষে আমাদের মত নয়।

৩.তৃতীয়ত, আমার কথা হলাে যে একমাত্র আদি পিতা বাবা আদম (عليه السلام) ছাড়া কেউই মাটির সৃষ্টি নন। কুরআনের একাধিক স্থানে বাশারকে মাটি থেকে সৃষ্টি কথা উল্লেখ আছে;

এগুলাে মূলত আদম (عليه السلام) কেই উদ্দেশ্য। যেমন তারা সুরা ছােয়াদের ৭১ নং যে আয়াতটি দলিল হিসেবে দিয়ে থাকেন-

إِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَائِكَةِ إِنِّي خَالِقٌ بَشَرًا مِنْ طِينٍ – فَإِذَا سَوَّيْتُهُ وَنَفَخْتُ فِيهِ مِنْ رُوحِي فَقَعُوا لَهُ سَاجِدِينَ – فَسَجَدَ الْمَلَائِكَةُ كُلُّهُمْ أَجْمَعُونَ- إِلَّا إِبْلِيسَ اسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنَ الْكَافِرِينَ

‘‘যখন আপনার রব ফেরেশতাদেরকে বলেছিল আমি মাটির তৈরী বাশার মানুষ সৃষ্টি করবো। আর যখন আকৃতি দেওয়া শেষ হবে অতঃপর ইহার মধ্যে রুহ প্রবেশ করানো হবে। তখন তোমরা তাঁর প্রতি সেজদায় পতিত হবে। অতঃপর ইবলিশ ব্যতীত সকল ফিরেশতাগণ তাঁর প্রতি সিজদায় পতিত হল…..।’’ (সূরা সোয়াদ, আয়াত, ৭১-৭৪)

তার ব্যাখ্যায় রঈসুল মুফাস্‌সির সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস [ওফাত.৬৮হি.]বলেন-

إِنِّي خَالِقٌ بَشَراً مِّن طِينٍ} يَعْنِي آدم

“যখন রব ফিরেশতাদেরকে বললেন আমি বাশার কে মাটি থেকে সৃষ্টি করবাে, উক্ত সাহাবী বলেন এখানে বাশার কে মাটি দিয়ে বলতে আদি পিতা আদম (عليه السلام) কে বুঝানাে হয়েছে।” ( তাফসীরে ইবনে আব্বাস, ১/৩৮৪পৃ)

তাফসীরে জালালাইন যেটি কওমী মাদরাসায়ও পড়ানো হয় সেখানে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় রয়েছে-

إنِّي خَالِق بَشَرًا مِنْ طِين- هُوَ آدَم ‘‘আমি বাশার কে তথা আদম (عليه السلام) মাটি দিয়ে সৃষ্টি করেছি। ’’তাই একমাত্র বাবা আদম (عليه السلام) ছাড়া আর কেহই মাটির তৈরী নয়; এমনকি তার স্ত্রীও নয়।

মহান রব তায়ালা ইরশাদ করেন- وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ مِنَ الْمَاءِ بَشَرًا ‘‘তিনি (আল্লাহ) বাশার তথা মানুষকে পানি (নুতফা) হতে সৃষ্টি করেছেন ।

নবী (সাঃ) নূর নাকি মাটি দ্বারা সৃষ্টি?

আল্লাহ তায়া’লা ইরশাদ করেন-

ﻗﺪ ﺟﺎﺀﻛﻢ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻧﻮﺭ ﻭ ﻛﺘﺎﺏ ﻣﺒﻴﻦ

অর্থঃ নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে একটা নূর… এবং স্পষ্ট কিতাব এসেছে।। (সূরা মায়িদা আয়াত- ১৫)

আলোচ্য আয়াতে নূর দ্বারা নবী করীম (ﷺ) কে বুঝানো হয়েছে।

বিশ্ব বিখ্যাত মুফাসসিরে কোরআন হযরত ইবনে আববাস (রাঃ) এর বিশ্ব বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ ইবনে আববাস এর মধ্যে আছে- ﻗﺪ ﺟﺎﺀﻛﻢ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻧﻮﺭ ﻭ ﻛﺘﺎﺏ ﻣﺒﻴﻦ ﻳﻌﻨﻲ ﻣﺤﻤﺪﺍ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﺅﺳﻠﻢ – অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর অর্থাৎ মুহাম্মদ (ﷺ) এসেছেন। (তাফসীরে ইবনে আববাস পৃষ্ঠা ৭২)।

ইমাম আবু জাফর মুহাম্মদ ইবনে জারীর আত্- তবারী (রা) তাঁর বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ ইবনে জারীর এর মধ্যে বলেন-

ﻗﺪ ﺟﺎﺀﻛﻢ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻧﻮﺭ ﻭ ﻛﺘﺎﺏ ﻣﺒﻴﻦ ﻳﻌﻨﻲ ﺑﺎﺍﻟﻨﺆﺭ ﻣﺤﻤﺪﺍ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﺅﺳﻠﻢ ﺍﻟﺬﻱ ﺍﻧﺎﺭ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻪ ﺍﻟﺤﻖ ﻭﺍﻇﻬﺮﺑﻪ ﺍﻻﺳﻼﻡ ﻭﻣﺤﻖ ﺑﻪ ﺍﻟﺸﺮﻙ

অর্থঃ- নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর অর্থাৎ মুহাম্মদ (ﷺ) এসেছেন, যে নূর দ্বারা আল্লাহ সত্যকে উজ্জ্বল ও ইসলামকে প্রকাশ করেছেন এবং শিরিককে নিশ্চিহ্ন করেছেন। ( তাফসীরে ইবনে জারীর ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ৮৬, সূরা মায়িদা আয়াত ১৫)।

ইমামুল মুতাকাল্লেমীন আল্লামা ফখরুদ্দীন রাযী (রা) এই আয়াত শরীফ ( ﻗﺪ ﺟﺎﺀﻛﻢ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻧﻮﺭ ﻭ ﻛﺘﺎﺏ ﻣﺒﻴﻦ ) প্রসঙ্গে বলেন- ﺍﻥ ﺍﻟﻤﺮﺍﺩ ﺑﺎﻟﻨﻮﺭ ﻣﺤﻤﺪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻭﺑﺎﻟﻜﺘﺎﺏ ﺍﻟﻘﺮﺍﻥ – অর্থঃ নিশ্চয়ই নূর দ্বারা মুহাম্মদ (ﷺ) এবং কিতাব দ্বারা আল কোরআন মজীদকে বুঝানো হয়েছে। (তাফসীরে কবীর ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৯৫, সূরা মায়িদা আয়াত ১৫)।

অনেকে আবার বলেন কোরআনে নূর বলা হয়েছে কিন্তু নূরের তৈরী বলা হয়নি,আবার বলে শুধু রুহ মোবারক নূর কিন্তু দেহমোবারক নয়,আবার বলে সাদা মাটির তৈরী (নাউযুবিল্লাহ!)

তাফসীরে কবীরে সূরা বাকারার ২৫৩ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় আদম (আ:) এঁর উপর রাসূল (ﷺ) এঁর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছে:-

أن الملائكة أمروا بالسجود لآدم لأجل أن نور محمد عليه السلام في جبهة آدم
নিশ্চয় ফেরেশতাদেরকে আদম (আ:) কে সেজদা করতে আদেশ করা হয়েছিল। কারণ, আদম (আ:) এঁর পেশানীতে মুহাম্মাদ (ﷺ) এঁর নূর ছিল।

রেফারেন্সঃ-

  • তাফসীরে কবীর,(১ম খন্ড,পৃঃ ৩১৮)
  • তাফসীরে লুবাব,(৩য় খন্ড,পৃ: ২৩৩)
  • তাফসীরে নিশাপুরী,(২য় খন্ড,পৃ১০৭)

ওহাবী ও শাইখ পূজারীরা এ আয়াতটার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে ধোকা দিয়ে থাকে । কেয়ামতের সকাল পর্যন্ত তাদের কাছে চ্যালেঞ্জ থাকলো এমন একটি কোরআনের আয়াত বা এমন একটি হাদিস আপনি পেশ করুন যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, নবী (ﷺ)কে নূর দ্বারা সৃষ্টি করা হয়নি, বরং মাটি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে ।

কিন্তু তারা ঘুরেফিরে কুল ইন্নামা আনা বাশারুম মিসলুকুম….. এই আয়াত পাঠ করে অপব্যাখ্যা করে যাবে । এর ভুল বাখ্যার দাঁতভাঙ্গা জবাব এই প্রবন্ধ টির মধ্যে দেওয়া হয়েছে ।

বর্তমানে নতুন করে দেওবান্দিরা বেশি বাড়া বাড়ি শুরু করেছে,মনে হয় তাদেরকে শাইখ পুজার ছোঁয়া লেগেছে । কারণ তাদের আকাবিরগণ নবী (ﷺ) কে নূর মেনেছে । মৌলানা আশরাফ আলী থানবী সাহেব এর মতে নবি নূরের তৈরী ,সর্ব প্রথম সৃষ্টি–নাসরুত-তীব ,পৃষ্ট ৬ ,লেখক মওলানা আশরাফ আলী থানবী সাহেব দেওবন্দী ।

হাদিসের আলোকে নবী (সাঃ) নূর


ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﻗﺎﻟﺔ : ﻛﻨﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﺸﺠﺮ ﺛﻮﺑﺎ ﻟﺮﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻓﺎﻧﻄﻔﺎ ﺍﻟﻤﺼﺒﺎﺡ ﻭ ﺳﻘﻄﺔ ﺍﻻﺑﺮﺓ ﻣﻦ ﻳﺪﻱ ﻓﺪﺧﻞ ﻋﻠﻲ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻓﺎﺿﺎﺀ ﻣﻦ ﻧﻮﺭ ﻭ ﺟﻬﻪ ﻓﺠﺪﺓ ﺍﻻﺑﺮﺓ –

অর্থঃ ‘‘হযরত আয়েশা (রা:) হতে বর্ণিত– তিনি বলেন,আমি রাত্রে বাতির আলোতে বসে নবী করীম (ﷺ)-এঁর কাপড় মোবারক সেলাই করেছিলাম। এমন সময় প্রদীপটি (কোন কারণে) নিভে গেল এবং আমি সুঁচটি হারিয়ে ফেললাম।এরপরই নবী করীম (ﷺ)-অন্ধকার ঘরে প্রবেশ করলেন। তাঁর চেহারা মোবারকের নূরের জ্যোতিতে আমার অন্ধকার ঘর আলোময় হয়ে গেল এবং আমি (ঐ আলোতেই) আমার হারানো সুঁচটি খুজে পেলাম’’।
[ইমাম ইবনে হায়তামী (রাঃ) এর আন-নে’মাতুল কোবরা আলার আলম গ্রন্থে ৪১ পৃষ্ঠা]

কয়েক জন সাহাবী থেকে বর্ণিত হয়েছে যে,রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন-“আঁমি আঁমার (জাতির)পিতা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এঁর দুয়া,ও ঈসা (আলাইহিস সালাম)এঁর সুসংবাদের ফসল।আঁমার মা আঁমাকে প্রসব করার সময় দেখলেন যে, কেমন যেন তাঁর পেট থেকে একটি নূর বের হল যা দ্বারা সিরিয়া আলোকিত হয়ে গেল(অন্য রেওয়াতে আছে, সিরিয়ার প্রসাদ গুলো আলোকিত হয়ে গেল)”।

রেফারেন্সঃ-

  • দালায়েলুন নুবুওয়্যাহ, বাইহাক্বী খন্ড-১,পৃষ্ঠা -৮৩ হাদিসঃ৩৫
  • জামেউল মাসানীদ ওয়াস সুনান,ইবনু কাসীর ১৫/৩০১ তরজমা-২৩৮৩৯(আমেনা বিনতে ওয়াহাব)
  • সিরাতে ইবনু হিশাম ১/১৬৬
  • তাফসিরে তাবারী ১/৫৬৬ *৫.
  • মুসতাদরাকে হাকেম ২/৬০০, ২/৫১৯ হাঃ ৪২৮৮
  • মুসনাদে আহমাদ ৪/১২৭-১২৮ হাদিসঃ১৬৭০০
  • মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাইসামী খন্ড -৮,পৃঃ২২২, ,২২৩ হাদীস নং -১৩৮৪২,১৩৮৪৭
  • আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া,ইবনু কাসির ৩/৩৮৩-৩৮৪
  • দুররে মানসূর,সুয়ূত্বী ১/৩৩৪ ,সুরা বাকারা, আয়াত-১২৬
  • সহীহ ইবনু হিব্বান ১৪/৩১২-৩১৩ হাঃ৬৪০৪


ইমাম যাহাবী(রহিমাহুল্লাহ) ইরবাজ ইবনু সারিয়াহ (রাদিঃ)এর হাদিসকে হাসান বলেছেন।(সিয়ারু আলামিন নুবালা ২৬/৪৭)

عن جابر بن عبد الله الأنصاري قال: قلت يا رسول الله بأبي أنت وأمي أخْبِرْني عن أول شيء خلقَه الله تعالى قبل الأشياء

…………..،قال: “يا جابر فإن الله تعالى خلق قبل الأشياء نور نبيك من نوره

হযরত জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবেদন করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ) আমার মা- বাবা আপনার কদম মোবারকে উৎসর্গিত, আপনি দয়া করে বলুন, সকল বস্ত্তর পূর্বে সর্বপ্রথম আল্লাহ তায়া’লা কোন বস্ত্তটি সৃষ্টি করেছিলেন?

নবীজী (ﷺ) ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়’লা সমস্ত কিছুর পূর্বে তোমার নবীর (তোমার) নূর মোবারক তাঁরই নূর মোবারক হতে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর ওই নূর আল্লাহ তায়’লারই মর্জি মুতাবেক তাঁরই কুদরতি শক্তিতে পরিভ্রমণ করতে লাগল। ওই সময় না ছিল বেহেশ্ত-দোযখ, আর ছিলনা আসমান- যমীন, চন্দ্র-সূর্য, মানব ও দানব।

এক পর্যায়ে মহান আল্লাহ যখন সৃষ্টিজগত পয়দা করার মনস্থ করেছিলেন, প্রথমেই ওই নূর মোবারককে চারভাগে বিভক্ত করে প্রথম অংশ দিয়ে কলম, দ্বিতীয় অংশ দিয়ে লওহ, তৃতীয় অংশ দিয়ে আরশ, সৃষ্টি করে চুতুর্থাংশকে পুণরায় চারভাগে বিভক্ত করে প্রথমাংশ দিয়ে আরশবহনকারী ফেরেশতাদের দ্বিতীয় অংশ দ্বারা কুরসী,

তৃতীয় অংশ দ্বারা অন্যান্য ফেরেশতাদের সৃষ্টি করে চুতুর্থাংশকে আবারও চারভাগে বিভক্ত করে প্রথম ভাগ দিয়ে সপ্ত আসমান, দ্বিতীয় ভাগ দিয়ে সপ্ত যমীন, তৃতীয় ভাগ দিয়ে বেহেশত- দোযখ এবং পরবর্তী ভাগ দিয়ে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সকল বস্ত্ত সৃষ্টি করে। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক,আল মাওয়াহিবুল লাদুনিয়া ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৭১)।

শাইখ পূজারীরা সহজেই হাদীসটিকে জাল বলে দেবে, কিন্তু তাদের মনে রাখা দরকার বড় বড় মোহাদ্দেসগণ হাদীসটিকে গ্রহণ করেছেন যার দ্বারা এটি গ্রহণযোগ্য হবে । এমনকি ওলামায়ে দেওবন্দের বড় বড় আকাবিরগণও গ্রহণ করে নিজেদের কিতাবে উল্লেখ করে নবী (ﷺ)কে নুর প্রমাণ করেছেন ।

হাদিস শরীফে আরও ইরশাদ হয়েছে।মিশকাত শরীফ ৫১৩ পৃষ্ঠায় আছে-

عن العرباض بن ساريه عن رسول الله صلى الله عليه وسلم انه قال انى عند الله مكتوب خاتم النبيين وان ادم لمنجدل فى طينته وساخبركم باول امرى دعوة ابراهيم وبشارة عيسى ورؤيا امى التى رأت حين وضعتنى وقد خرج لها نور اضاءلها منه قصور الشام- رواه فى شرح السنة ورواه احمد عن ابى امامة من قوله ساخبركم الى اخره- (دلائل النبوة ومعرفة احوال صاحب الشريفة للبيهقى ص ۲/۱۳٠ (مشكوة شريف ص ۵۱۳(
হযরত ইরবাদ্ধ ইবনে সারিয়া (রাঃ) হতে বর্ণিত।তিনি রাসূল (ﷺ)থেকে বর্ণনা করেছেন: “নিশ্চয় আঁমি আল্লাহ তায়ালার নিকট নবীগনের (আঃ) পরিসমাপ্তিকারী হিসেবে লিপিবদ্ধ এবং তখন হযরত আদম(আঃ) মাটির সাথে মিশ্রীত ছিলেন।আঁমি শ্রীঘ্রই তোমাদেরকে আঁমার প্রাথমিক অবস্থা সম্পর্কে সংবাদ দেবো।আর তা হচ্ছে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এঁর দোয়া এবং হযরত ঈসা(আঃ) এঁর সুসংবাদ এবং আঁমার মহিয়সী আম্মাজানের অবলোকন যা তিঁনি আঁমাকে প্রসবকালীন দেখেছেন এবং এমন একটি নূর বের হল যা দ্বারা সিরিয়ার বা শ্যাম প্রাসাদ সমূহ আলোকিত হয়ে গেল ।

রেফারেন্সঃ

  • মিশকাত শরীফ ৫১৩ পৃষ্ঠা,হাদীস নং ৫৭৫৯
  • ঈমাম আহমদ ঈবনে হাম্বল(রহঃ): আল মুসনাদ ৫ম খণ্ড, ২৬২ পৃঃ
  • মোল্লা আলী ক্বারী: মিরকাতুল মাফাতীহ,১০ম খণ্ড, ২৯ পৃঃ
  • বায়হাকি: দালায়েলুন নবুয়ত :১/৮৩
  • তাফসীরে ইবনে কাসীর :৪/৩৬০
  • হাকেম : মুসতাদরিক: ৩/৬১৬

নবী করিম (ﷺ) এঁর জননী বর্ণনা করেন,তাঁর গর্ভ সঞ্চারের পর আঁমি একটি নূর দেখলাম, যাতে সিরিয়ার বুছরা শহর এবং শাম অঞ্চলের রাজপ্রসাদ সমূহ আঁমার দৃষ্টিতে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নুর কিভাবে একের পর এক স্থান পরিবর্তন করে ।


عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ قُرَيْشًا كَانَتْ نُورًا بَيْنَ يَدَيِ اللَّهِ قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ آدَمَ بِأَلْفَيْ عَامٍ يُسَبِّحُ ذَلِكَ النُّورُ وَتُسَبِّحُ الْمَلائِكَةُ بِتَسْبِيحِهِ، فَلَمَّا خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ أَلْقَى ذَلِكَ النُّورَ فِي صُلْبِهِ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ: “فَأَهْبَطَنِي اللَّهُ إِلَى الأَرْضِ فِي صُلْبِ آدَمَ، وَجَعَلَنِي فِي صُلْبِ نُوحٍ فِي سَفِينَتِهِ، وَقَذْفَ بِي فِي النَّارِ فِي صُلْبِ إِبْرَاهِيمَ عَلَيْهِ السَّلامُ، ثُمَّ لَمْ يَزَلْ يَنْقُلُنِي فِي الأَصْلابِ الْكَرِيمَةِ إِلَى الأَرْحَامِ الطَّاهِرَةِ، حَتَّى أَخْرَجَنِي مِنْ بَيْنَ أَبَوَيَّ، وَلَمْ يَلْتَقِيَا عَلَى سِفَاحٍ قَطُّ”

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত।তিনি বলেন আমি রাসুল (ﷺ) কে জিজ্ঞাসা করলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ) হযরত আদম যখন জান্নাতে ছিলেন তখন আঁপনি কোথায় ছিলেন? রাসূল (ﷺ) মুচকি হাঁসি দিলেন এতে উঁনার দাঁত মোবারক দেখা গেল।

এরপর তিঁনি (ﷺ) বললেন আঁমি তখন তাঁর পৃষ্টদেশে ছিলাম।তিঁনি যখন দুনিয়ায় অবতরণ করলেন তখনো আঁমি তাঁর পৃষ্টদেশে ছিলাম।আর নুহ (আঃ) যখন কিস্তিতে আরোহন করছিলেন তখন আঁমি তাঁর পৃষ্টদেশে ছিলাম।আর যখন ইব্রাহীম (আঃ) অগ্নিকূপে ছিল তখন আঁমি তাঁর পৃষ্টদেশে ছিলাম। [মুসনাদে ইবনে আবু আমর আল-আদনী পৃঃ১১০, ইবনে কাসির,আলবেদায়া ওয়ান নেহায়া,২/২৫৮]

বেদায়া ও নেহায়া গ্রন্থে উল্লেখ আছে– হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) একদিন নবী করীম (ﷺ)-এঁর খেদমতে আরয করলেন-“ইয়া রাসুলাল্লাহ! (ﷺ) হযরত আদম (عليه السلام) যখন জান্নাতে ছিলেন, তখন আঁপনি কোথায় ছিলেন”? হুযুর পুরনূর (ﷺ) মুচকি হাসি দিয়ে বললেন- “আদমের ঔরসে।তারপর হযরত নূহ (عليه السلام) তাঁর ঔরসে আঁমাকে ধারণ করে নৌকায় আরোহণ করেছিলেন।

তারপর হযরত ইব্রাহীম (عليه السلام)-এঁর পৃষ্ঠদেশে।তারপর পবিত্র (ঈমানদার) পিতা মাতাগণের মাধ্যমে আঁমি পৃথিবীতে আগমন করি। আঁমার পূর্ব পুরুষগণের মধ্যে কেহই চরিত্রহীন ছিলেন না”
(বেদায়া-নেহায়া,২য় খন্ড,২৫ পৃষ্ঠা)

আমাদের নবী (সঃ) সৃষ্টির দিক দিয়ে জিবরাইল ফেরেশতা (আঃ) এরও আগে সৃষ্টি হয়েছেন ।
وعن ابلى هريرة رضى الله عنه ان رسول الله صلى الله عليه و سلم سائل جبريل عليه السلام فقال يا جبريل كم عمرك من السنين فقال يا رسول الله مست اعلم غير ان فى الحجاب الرابع نجما يطلع في سبعين الف سنة مرة رايته اثنين و سبعين الف مرة فقال يا جبريل و عزة ربى جل جلا له انا ذالك الكو
ب-


(ক) ইমাম বুখারীর রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখিত : তারিখ উল কাবির
(খ) ইমাম বুরহান উদ্দিন হালাবী শাফেয়ী : সিরাতে হালাবিয়্যাহ ১ম খন্ড:৪৯ পৃ:
[ইমাম বুখারীর সুত্রে]
(গ) আল্লামা ইসমাইল হাক্কী : তফসীরে রুহুল বয়ান :৩/৫৪৩ : সুরা তওবা ১২৮
(ঘ) আল্লামা শায়খ ইউসুফ নাবহানী : যাওয়াহিরুল বিহার : ৩/৩৩৯
[নিজস্ব সনদে আবু হুরায়রা (রা:) থেকে]

এছাড়া معارج النبوة গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখ আছে (মোল্লা মুইন ওয়াইজ আল-কাশফি রহঃ)
হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ।

আমাকে জিব্রাইল (আঃ) বলেছে, হে মোহাম্মদ (সাঃ) যেদিন আল্লাহ তাআলা আমাকে সৃষ্টি করেছিলেন সেই দিন আমাকে আরশের নিচে ১৮০০০ বছর অবস্থান করতে বলেছিলেন । তারপর জিজ্ঞাসা করেছিলেন (من خلقك) হে জিবরীল তোমাকে কে সৃষ্টি করেছে, তখন আমি বলেছিলাম হে পরওয়ারদিগার , কে আর হবে আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন ।
انت الواحد القهار العزيز الجبار المعبود الخ
তারপর আমি আরশের নিচে অবস্থান করলাম ১৮০০০ বছর আল্লাহ তাআলা কোন কথা বললেন না ।

১৮০০০ বছর পর আবার জিজ্ঞাসা করলেন । ( من خلقك و من انا؟) হে জিবরীল তোমাকে কে সৃষ্টি করেছে এবং আমি কে ?
আমি বলেছিলাম (انت خالقى) আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন |
তারপর ১৮০০০ বছর আর কোন কথা বললেন না ।

১৮০০০ বছর পর আমাকে জিজ্ঞাস করলেন ( من اناو من انت) who I am and who are you? আমি কে এবং তুমি কে? তখন আমি বললাম,
(انت الله الخالق البارئ و انا العبد الخاضع الخاشع)
আল্লাহ তা’আলা বললেন হে জিবরীল তুমি ঠিক বলেছ ।

জিব্রাইল আলাইহিস সালাম বলেন আমি জিজ্ঞাসা করলাম হে আল্লাহ তাআলা আমার পূর্বের কি কাউকে আপনি সৃষ্টি করেছেন ?আমাকে আদেশ দেওয়া হল সামনের দিকে দেখো সামনের দিকে আমি একটি অতি উজ্জ্বল নুর দেখলাম । আমি আল্লাহ তায়ালাকে জিজ্ঞাসা করলাম হে আল্লাহ তায়ালা এই নূরটি কার ? যার জ্যোতি আমার চোখে ঝাপসা করে দিচ্ছে । আল্লাহ তায়ালা উত্তর দিলেন এই নুর এমন একজনের যার জন্য আমি তোমাকে সৃষ্টি করেছি এরপর সমস্ত সৃষ্টি জগত সৃষ্টি করবো । তিনি হলেন আমার বন্ধু, আমার প্রিয় নবী, মোহাম্মদ । সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ।
(মুয়ারিজুন নবুওয়াত ২৬ পৃ)

আব্দুর রহমান বিন আব্দুস সালাম আস-সুফুরী (রহঃ) নুজহাতুল মাজালিস গ্রন্থের ২য় খন্ডের ৯৬-৯৭ পৃষ্ঠার মধ্যে উল্লেখ করেছেন ।
হযরত আব্বাস (রাঃ) বলেন যখন আল্লাহ তাআলা নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূরকে সর্বপ্রথম সৃষ্টি করেন ।

হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,রাসূল (ﷺ) এঁর রূহ মোবারক আদম (আ:) সৃষ্টি দু’হাজার বছর পূর্বে আল্লাহ তায়ালার সামনে নূর হিসেবে ছিল।ঐ নূর আল্লাহ তায়ালার তাসবীহ পড়তেছিল এবং তার দেখাদেখি ফেরেশতারা আল্লাহ তায়ালার তাসবীহ পড়তেছিল।

অত:পর আল্লাহ তায়ালা যখন আদম (আ:) কে সৃষ্টি করলেন ঐ নূর তার মেরুদন্ডে দিয়ে দিলেন।রাসূল (ﷺ) বলেন, অত:পর আল্লাহ তায়ালা আঁমাকে আদমের মেরুদন্ডে করে দুনিয়ায় নামান এবং বংশানুক্রমে আঁমাকে নূহ (আ:) এঁর মেরুদন্ডে দেয়া হয়।এরপরে আঁমাকে ইবরাহীম (আ:) এঁর মেরুদন্ডে নিক্ষেপ করা হয়।

এভাবে আল্লাহ তায়ালা আঁমাকে সম্মানিত মেরুদন্ড ও পবিত্র রেহেমের মাধ্যম করে স্থানান্তর করেন এমনকি আঁমার পিতামাতার মাধ্যমে আঁমাকে জগতে আবির্ভাব ঘটান।তারা কখনো অনাচার করেনি।”
[শরহুশ শেফা লি আলী আল কারী,১ম খন্ড,পৃ:২০৬]

হাদিস শরীফে আরও ইরশাদ হয়েছে:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ” لَمَّا خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ خَبَرَ آدَمُ بَنِيهِ فَجَعَلَ يَرَى فَضَائِلَ بَعْضِهِمْ عَلَى بَعْضٍ قَالَ : فَرَأَى نُورًا سَاطِعًا فِي أَسْفَلِهِمْ ، فَقَالَ : يَا رَبِّ مَنْ هَذَا ؟ قَالَ : هَذَا ابْنُكَ أَحْمَدُ هُوَ الأَوَّلُ ، وَهُوَ الآخِرُ ، وَهُوَ أَوَّلُ شَافِعٍ

অর্থ: হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিঁনি ইরশাদ করেন,যখন মহান আল্লাহ তায়ালা হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করলেন, তখন উঁনার সন্তানদের দেখানো হলো।তখন হযরত আদম আলাইহিস সালাম উঁনার সন্তানদের পারষ্পরিক শ্রেষ্ঠত্ব দেখতে থাকেন।

অবশেষে তিঁনি এক চমকপ্রদ নূর মুবারক দেখতে পেলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন, হে আঁমার রব! এই নূর মুবারক কার? মহান আল্লাহ ইরশাদ মুবারক করলেন,তিঁনি আঁপনার আওলাদ হবেন। অর্থাৎ শেষে আগমন করবেন। উঁনার নাম আসমানে আহমদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।তিঁনি সৃষ্টিতে প্রথম, তিঁনি প্রেরনে শেষ,তিঁনি সর্বপ্রথম শাফায়াতকারী।


রেফারেন্সঃ
(ক.) দালায়েলুন নবুওয়াত ৫/৪৮৩
(খ.) খাসায়েসুল কোবরা ১/৭০
(গ.) সুবহুল হুদা ওয়ার রাশাদ ১/৭১
(ঘ.) শরহে মাওয়াহেব ১/৪৩

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নূর এ বিষয়ে এত পরিমান দলিল রয়েছে যে,শাইখ পূজারীরা সারাজীবন পড়েও শেষ করতে পারবে না । সংক্ষেপে কিছু দলিল তুলে ধরা হলো। আর শাইখ পূজারীদের কে চ্যালেঞ্জ করা হলো কেয়ামতের সকাল পর্যন্ত একটা দলিল আপনারা পেশ করুন যেখানে বলা হয়েছে নবী সাল্লাহু সাল্লাম কে মাটি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ‌?।

সমস্ত ওহাবী, লা-মাযহাবী, কাদিয়ানী, শাইখ পূজারী ফিতনা থেকে আমাদেরকে বাঁচতে হবে । আল্লাহ যেন তৌফিক দান করেন আমিন ।

Spread the love

Leave a Comment