পবিত্র কুরআনকে কুরআন শরীফ বলা কি যায়েজ ?

প্রশ্নঃ- পবিত্র কুরআনকে কুরআন শরীফ বলা কি যায়েজ ? দয়া করে জানাবেন

উত্তরঃ- পরিষ্কারভাবে উত্তরটি দেয়ার পূর্বে আপনাদের কে কিছু কথা বলতে চাই তা হলো,বর্তমানে অসংখ্য ওলামায়ে কেরাম নিজেকে মানুষের সামনে প্রভাবশালী করার জন্য বিভিন্ন ফন্দি এঁটে থাকে এবং নানারকম অপ্রয়োজনীয় ফতোয়া দেয়। তার পর মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব লেগে যাক এতে তাদের কোন কিছু যাইওনা আসেও না । দেশের জনসাধারনের কেছে নিজেদের প্রভাব পড়লেই তারা খুশি । এমনও হুজুর আছেন যারা নিজেদের প্রভাব বিস্তার করার জন্য জঘন্য কথাবার্তার আশ্রয় নিয়ে থাকেন । জৈনক এক মাওলানা উম্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) সম্পর্কে ও উম্মুল মু’মিনীন মা খাদিজাতুল কোবরা (রাঃ) সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করেছেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে নিরক্ষর বলেছেন, সিক্স প্যাক বলেছেন, তখন দলিল না থাকলেও সমস্যা নেই । নিজের ইচ্ছামত ফতোয়া দেয় তখন কোন প্রকার দলিলের প্রয়োজন হয় না। সর্বপ্রথম এই ফেতনা বাজদের থেকে নিজেদেরকে বাঁচিয়ে রাখুন । নইলে কোন ফাঁকে ঈমান চুরি করে নেবে তা নিজেও বুঝতে পারবেন না ।

এবার আসুন উত্তরটা জেনে নেই, শরীফ শব্দের অর্থ হল, সম্মানজনক, মর্যাদাবান । আর “কোরআন শরীফ” যার অর্থ হলো সম্মানজনক/সম্মানিত/মর্যাদাবান কুরআন ।
শরিফ এর সমর্থক শব্দ হলো, কারিম । যেমন কুরআনুল কারীম/কুরআনে কারীম যার অর্থ সম্মানজনক/সম্মানিত/মর্যাদাবান কুরআন ।

যারা কুরআন শরীফ বলা নিয়ে প্রশ্ন তোলে তারা আবার নিজেকে বড় শিক্ষিত বলে দাবি করে। আমার মনে হয় তারা পড়াশোনায় ফাঁকি দিয়েছে, সমার্থক শব্দ, বিপরীত শব্দ, এসব পড়েনি । যদি পড়তো তাহলে এমন প্রশ্ন করত না । কোরআনের তাফসীর যারা পড়েন বা পড়েছেন লক্ষ্য করে দেখবেন, একটি শব্দের কয়েকটি সমার্থক শব্দ ব্যবহার করা হয়ে থাকে । যাতে করে পাঠকবৃন্দ ভালোভাবে বুঝতে পারে । আরবিতে কারীম শব্দের সমার্থক শব্দ হলো শারীফ ।

আপনি কোরান মাজিদ, কোরআন শরীফ, কুরআনে কারীম, কুরআনুল হাকিম,ইত্যাদি বলতে পারেন কোন সমস্যা নেই । যেটা আপনার সুবিধা মনে হয় সেটা আপনি বলুন ।

কোরআন শরীফ বলা নাজায়েজ এমন যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে তাহলে খুশি হয়ে তাকে ৫০০০০ টাকা উপহার দেব । (উপহার নিতে এই ওয়েবসাইটের ওনারে সঙ্গে যোগাযোগ করুন)

এবার একটু সামনে চলুন- আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কোরআন শরীফে ইরশাদ করেছেন,
وَمَن يُعَظمْ شَعَائِرَ اللَّهِ فَإِنَّهَا مِن تَقْوَى الْقُلُوبِ.
যে আল্লাহর নিদর্শন সমূহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে, নিশ্চয়ই তা হৃদয়ের আল্লাহভীতি প্রসূত। [সূরা হজ্জ-৩২]

কাবা, মক্কা, মদিনা, রওজা, ইত্যাদির শেষে আমরা শরীফ শব্দ যুক্ত করে থাকি সম্মান এর খাতিরে । এটা সম্পূর্ণ রূপে জায়েজ এমনি ভাবে কুরআনের ক্ষেত্রেও শরীফ শব্দ ব্যবহার জায়েজ । আপনি চাইলে অন্য শব্দ ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু শরীফ শব্দ ব্যবহার না জায়েজ বলতে পারবেন না। এর পরেও যারা জায়েজ নেই বলে, তারা এটি অজ্ঞতার কারণে বলে থাকে।

শরীফ এটি সম্মানসূচক শব্দ। কুরআনসহ ইসলামী প্রতীকসমূহকে সম্মানের নির্দেশ এসেছে। সে হিসেবে “শরীফ” শব্দটি যেহেতু সম্মানসূচক শব্দ। তাই এটি ব্যবহারে শরয়ী কোন বিধিনিষেধ নেই।

কোন জিনিস অবৈধ প্রমাণ করার জন্য দলিল লাগে তবে কেউ যদি অবৈধ প্রমাণ না করতে পারে তাহলে সেটা নিঃসন্দেহে বৈধ হবে ।

Spread the love

1 thought on “পবিত্র কুরআনকে কুরআন শরীফ বলা কি যায়েজ ?”

  1. একটা জিনিস হলো বর্তমান মানুষ এর বোঝানো style আর আগের মানুষ এর বোঝানো style এক রকম নয় । এখন বেশি ভাগ মানুষ শিক্ষিত কিন্তু আগে এমন টা ছিল না । এই কারণে তাদের বোঝানো জন্য এমন কিছু শব্দ ব্যবহার করা লাগবে যাতে তারা বুঝতে পারে।

    Reply

Leave a Comment