বিবাহের জন্য ইস্তেখারা
বিবাহের জন্য ইস্তেখারা কিভাবে করতে হয় তা আজ আলোচনা করব । জীবনসঙ্গী/সঙ্গিনী খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে উপকৃত হবেন। ইনশাল্লাহ
প্রশ্নঃ- বিবাহের জন্য ইস্তেখারা কি ভাবে করতে হয়?
উত্তরঃ- ১৩৮- বিবাহের মাধ্যমে একটি পবিত্র সম্পর্ক তৈরি হয় । আর সেই সম্পর্কটা মৃত্যুর আগে পর্যন্ত সুন্দর এবং মজবুত থাকে,যদি জীবনসঙ্গী ভালো হয় ।
বিবাহের পূর্বে যখন বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রস্তাব আসে তখন অনেকেই চিন্তিত থাকেন যে তার জীবন সঙ্গী ভালো হবে কিনা । যদি আপনি এ বিষয়ে চিন্তিত হয়ে থাকেন তাহলে ইস্তেখারার মাধ্যমে সুন্দর সমাধান বের করতে পারেন । ইনশাল্লাহ
বিবাহের জন্য ইস্তেখারা করার নিয়ম
- দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে হবে
- আল্লাহর প্রশংসা করতে হবে
(সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার) বেশি বেশি পাঠ করতে হবে ।
- নবী (সাঃ) এর উপর দরুদ পাঠ করতে হবে
- তারপর ইস্তেখারার এই দোয়াটি পড়তে হবে
পড়ার আগে অবশ্যই মনে রাখতে হবে বিবাহের জন্য ইস্তেখারা তাই বিবাহ সম্পর্কিত শব্দ যুক্ত করা হয়েছে এবং যে শব্দগুলো বিবাহের ইস্তেখারার জন্য প্রয়োজন নেই সেগুলো যুক্ত করা হয়নি ।
দোয়াটি হল

উচ্চারণ:-
”আল্লাহুম্মা ইন্নী-আস্তাখিরুকা বি-ইলমিকা ওয়া আস্তাকদিরুকা বি-কুদরাতিকা ওয়া-আসআলুকা মিনফাদলিকাল আযীম, ফা-ইন্নাকা তাকদিরু ওয়ালা আকদিরু, ওয়া তা’লামু ওয়ালা আ’লামু ওয়া আন্তা আল্লামুল গুয়ূব।
আল্লাহুম্মা ইন-কুন্তা তা’লামু আন্না “হাযান-নিকাহু” খাইরুল্লি ফীহ- দ্বীনী ওয়া মা’আশী ফাকদুরহুলী ওয়া-ইয়াসসিরহু লী, সুম্মা বা-রিকলী ফীহ, ওয়া ইন কুনতা তা’লামু আন্না “হাযান-নিকাহু” শাররুল্লী ফী দীনী ওয়া মা’আশী,ফাসরিফহু আন্নী ওয়াসরীফনী আনহু ওয়াকদুর লিয়াল খাইরা হাইসু কানা সুম্মা আরদিনী বিহ।”
অর্থ:-
“হে আল্লাহ! আমি তোমার জ্ঞানের সাহায্য চাইছি, তোমার শক্তির সাহায্য চাইছি এবং তোমার মহান অনুগ্রহ চাইছি। তুমিই শক্তি ও ক্ষমতার অধিকারী, আমার কোন ক্ষমতা নেই। তুমি অফুরন্ত জ্ঞানের অধিকারী, আমার কোন জ্ঞান নেই। তুমি অদৃশ্যবিষয়ে সম্পূর্ণরূপে জ্ঞাত। হে আল্লাহ! তুমি যদি এই বিবাহ আমার জন্য, আমার দ্বীনের দৃষ্টিকোণ হতে, আমার জীবন যাপনের ব্যাপারে ভাল মনে কর তবে তা আমার জন্য নির্দিষ্ট করে দাও এবং আমার জন্য সহজ করে দাও। পক্ষান্তরে তুমি যদি এই বিবাহ আমার জন্য আমার দ্বীনের দৃষ্টিকোণ হতে, আমার জীবন যাপনের ব্যাপারে ক্ষতিকর মনে কর, তবে তুমি সে কাজটি আমার থেকে দূরে সরিয়ে দাও। এবং আমাকে তা থেকে বিরত রাখ। এবং যেখান থেকে হোক তুমি আমার জন্য কল্যাণ নির্ধারণ করে দাও”।
- (তিরমিজি ৪৮০ ইবনু মাজাহ (১৩৮০,রিয়াদুস সলিহীন ৭২২)
প্রথম দিন সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে না পারলে সাতদিন ইস্তেখারা করা যেতে পারে ।
ইস্তেখারা করলে স্বপ্নের মাধ্যমে যে ইঙ্গিত পাওয়া যাবে এটা জরুরি নয় ।
ইস্তেখারার উদ্দেশ্য হল আল্লাহর কাছে সঠিক সিদ্ধান্ত চেয়ে দোয়া করা । যদি আমরা সঠিকভাবে ইস্তেখারা করতে পারি তাহলে আল্লাহ তা’আলা আমাদের যেটা । ভালো হবে সেদিকে ফিরিয়ে দেবেন ।
ইস্তেখারা করার পর আপনার মনে যে সিদ্ধান্ত বারবার উদিত হবে আপনি সেটাই ফলাফল বলে ধরবেন । এ ছাড়া কেউ যদি স্বপ্নেও দেখে, তাহলে এটা আরো ভালো । আবার কেউ যদি স্বপ্নের সাদা অথবা সবুজ কিছু দেখে তাহলে এটা ভালো লক্ষণ। আর যদি কেউ লাল অথবা কালো কিছু দেখে তাহলে সেটা খারাপ বলে গণ্য হবে ।
ইস্তেখারার দোয়াটি চাইলে দেখে দেখে পড়তে পারেন । তবে মুখস্থ করতে বেশি সময় লাগবে না মুখস্ত করলে বেশি উত্তম হবে । পড়ার সময় মনোযোগ বেশি বৃদ্ধি পাবে ।
আশা করি বিবাহ সম্পর্কে ইস্তেখার ব্যাপারে ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন । এরপরে কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট বক্সে প্রশ্ন করতে পারেন ।
এবার পড়ুন-
- ইস্তেখারার নামাজ ও দোয়া ও ইস্তেখারা করার নিয়ম
- ৫টি কারণে মানুষ সারা জীবন গরীব থাকে
- স্ত্রী খারাপ ব্যাবহার করলে স্বামী কি করবে ?
Q: মৃত্যুর ব্যাপারে ইস্তেখারা করা কি জায়েজ?
An: মৃত্যুর ব্যাপারে ইস্তেখারা করা বৈধ নয় ।
Q: ইস্তেখারার দু’আ কি দেখে দেখে পড়া যাবে?
An: জি চাইলে দেখে দেখে পড়তে পারেন, তবে মুখস্থ পড়া বেশি উত্তম হবে । মুখস্থ পড়লে বেশি মনযোগ বৃদ্ধি পায় ।
Q: ইস্তেখারা করার সঠিক সময় কখন?
An: যে কোনো সময় ইস্তেখারা করতে পারেন ।
বিবাহিত মেয়ের স্বামীকে পছন্দ না হলে ডিভোর্স এর সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ইস্তিখারা করা কি বৈধ?