রোজা রাখার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া সকল মুসলমানের মুখস্ত আছে তবু একবার রিভাইস করে নেওয়া উত্তম । তাছাড়া বর্তমান ফিতনার যুগে অনেকেই বলছেন রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া বানানো এর কোন অস্তিত্ব নেই এবং এসব করা চলবে না । এর দ্বারা সাধারণ মানুষ বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছেন ।
আজ রোজা রাখার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া আপনাদের সামনে তুলে ধরব এবং এর দলিল তুলে ধরবো । যাতে আপনার এবাদত ও বিশ্বাসের মধ্যে কেউ সমস্যা সৃষ্টি না করতে পারে ।
প্রথমে জানবো ইফতারের দোয়া ।
মুয়ায ইবনে যুহরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত
তাঁর নিকট হাদীস পৌঁছেছে যে, নবী (সাঃ) ইফতারের সময় বলতেনঃ
اللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ
“আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া ‘আলা রিযক্বিক্বা আফতারতু”। অর্থ- হে আল্লাহ! আমি আপনার উদ্দেশ্যেই রোজা পালন করেছি এবং আপনার দেয়া রিযিক দ্বারাই ইফতার করেছি।
[আবু দাউদ, হাদিস নং ২৩৫৮]
আবু দাউদ শরীফের এই হাদীস দ্বারা স্পষ্ট যে রোজা ইফতার করার সময় আমরা যে দোয়াটি পাঠ করি সেটা সম্পূর্ণ সুন্নতি দোয়া । তাই পরবর্তীতে কেউ যদি বলে এসমস্ত বানানো মিথ্যা তাহলে তার কথায় কর্ণপাত করবেন না ।
এবার জানবো রোজা রাখার নিয়ত
নিয়ত নিয়ে অনেক মানুষের সমস্যা অনেকে বলে থাকেন নিয়ত বলে কিছু নেই, নিয়ত করা বেদাত ।
প্রিয় দর্শক নিয়ত করা,চলবে নাকি চলবে না আসুন এটাও হাদিস দ্বারা জেনে নেয় ।
বুখারী শরীফের প্রথম হাদিসে উল্লেখ আছে হযরত ওমর ফারুক (রা) বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি
“ إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ،
all act depends upon intention
প্রত্যেকটি কাজ নিয়তের উপর নির্ভর করে ।
(বুখারী ০১)
নামাজ পড়লে আপনি কোন ওয়াক্তের কি নামাজ পড়ছেন ফরজ নাকি ওয়াজিব নাকি নফল এ নিয়ত আপনার থাকতে হবে ।
তেমনি রোজা রাখার ক্ষেত্রেও আপনি কোন রোজা রাখছেন ফরজ রোজা, নাকি নফল রোজা, নাকি মানতের রোজা তারও নিয়ত থাকতে হবে ।
আপনি বাড়ি থেকে বেরোনোর পূর্বে কোথায় যাবেন তারাও নিয়ত ঠিক করতে হয় । নিয়ত ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বের হয়না ।
আসুন এবার মূল বিষয়ে আসি ।
নিয়তের কথা হাদিস দ্বারা আমরা পেলাম কিন্তু কিভাবে নিয়ত করতে হবে সেটা পেলাম না ।
কেউ যদি মনে মনে নিয়ত করে আমি কালকে রোজা রাখব তাহলেই হয়ে যাবে ।
মনে মনে নিয়ত করলে যথেষ্ট মৌখিক নিয়ত জরুরী নয় ।
মুখে নিয়ত করা মুস্তাহাব বা ভালো
এবার আপনাদের সামনে ২টি আরবি নিয়ত বাংলায় উচ্চারণ ও অর্থসহ পেশ করা হল ।
نويت اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم.
উচ্চারণ:- নাওয়াইতু আন আসুমা গাদাম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।
অর্থ – হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমাকে কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।
نويت اَنْ اُصُوْمَ غَدًا لله تعالى مّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ هذا
উচ্চারণ :- নাওয়াইতুয়ান আসুমা গাদান লিল্লাহি তা’আলা মিন শাহরি রামাদানা হাযা ।
অর্থ :- আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আগামীকাল রমজানের রোজার নিয়ত করছি ।
২টো আরবি নিয়ত তার উচ্চারণ ও অর্থ আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো । যদি কেউ আরবি মুখস্ত করতে চান তাহলে করবেন আর নইলে তার অর্থকে বাংলা নিয়ত হিসাবে করতে পারবেন ।