নবীজীর প্রতি সাহাবীগণের প্রেমের কিছু নমুনা

নবীজীর প্রতি সাহাবীগণের প্রেমের কিছু নমুনা

নবী কারীম (সাঃ) কে ভালোবাসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ স্তরে উন্নীতো ছিলেন সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)। তাঁরা সত্যিকারের নবী-প্রেমের বেনজীর দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন।

আবু সুফিয়ান (রাঃ) ইসলাম গ্রহণের আগেই এই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, আমি কাউকে এতোটা ভালোবাসতে দেখিনি, মুহাম্মদ (সাঃ) কে তাঁর সঙ্গীরা যতোটা ভালোবাসে। [সীরাতে ইবনে হিশাম ২/১৭২; আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া ৪/৬৫]

এমনিভাবে হযরত উরওয়া ইবনে মাসঊদ (রাঃ) ইসলাম গ্রহণের আগে হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় মুশরিকদের পক্ষ হয়ে কথা বলতে এসেছিলেন। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর তিনি নিজো কওমের নিকট এই অনুভূতি পেশ করেছিলেন-

আমি অনেক রাজা বাদশাহদের কাছে প্রতিনিধি হয়ে গিয়েছি। কায়সার কিসরা ও নাজাশীর কাছেও গিয়েছি। আল্লাহর কসম! মুহাম্মাদ (সাঃ) কে তাঁর সঙ্গীরা যেভাবে ভক্তি করে সেভাবে আমি আর কাউকে দেখিনি তাদের বাদশাহকে ভক্তি করতে।

আল্লাহর কসম! তিনি থুথু ফেললেই তাদের কেউ না কেউ তা হাতে নিয়ে নেয় এবং তা চেহারায় ও শরীরে মাখে। তিনি যখন তাদেরকে আদেশ করেন তখন তাঁরা তাঁর আদেশ পালনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আর যখন তিনি অযু করেন তখন তাঁর ওযুতে ব্যাবহৃতো পানি পাওয়ার জন্য লড়াই করার উপক্রম হয়। [সহীহ বুখারী, হাদীস ২৫৮১]

হযরত আমর ইবনুল আস (রাঃ) মৃত্যুশয্যায় বলেছেন- এই পৃথিবীতে আমার কাছে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) ই-এর চেয়ে অধিক প্রিয় ও মহান আর কেউ নেই। আমার হৃদয়ে তাঁর সম্মান ও মর্যাদার এ অবস্থা ছিলো যে, আমি তাঁর দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারতাম না। আমাকে যদি তাঁর দেহাবয়বের বর্ণনা দিতে বলা হয়, আমি পারবো না। কারণ, আমি দুচোখ ভরে তাঁকে দেখতে পারিনি। [সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৯২]

হযরত জাবের (রাদিআল্লাহু তা’আলা আ’নহু) বলেন, উহুদ যুদ্ধের সময় রাতে আমার আব্বা আমাকে ডেকে বললেন- আমার প্রবল ধারণা, আমি নবী কারীম *(সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গীদের মধ্যে আগেভাগেই শহীদ হবো। আর আমি তোমাকেই সবচেয়ে প্রিয় হিসেবে রেখে যাচ্ছি, তবে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) ছাড়া (কারণ, তিনিই আমার নিকট সবচেয়ে প্রিয়)। [সহীহ বুখারী, হাদীস ১৩৫১]

হযরত আনাস (রাদিআল্লাহু তা’আলা আ’নহু) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) কে দেখেছি, তাঁর চুল মুবারক মু-ন করা হচ্ছে আর তাঁর সাহাবীরা তাঁকে ঘিরে আছে। তাঁরা চাইছিলেন তাঁর একটি চুলও যেনো মাটিতে না পড়ে। বরং কারো না কারো হাতেই পড়ে। *[সহীহ মুসলিম, হাদীস  ২৩২৫]

Spread the love

Leave a Comment