শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলবী (রহঃ) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলবী (রহঃ) ছিলেন একজন বিখ্যাত মুহাদ্দিস । তাফসির, হাদিস, ফেকাহ সহ বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী ছিলেন । তিনি একজন সুফি সাধক ব্যক্তি ছিলেন । মানব কল্যাণে অসংখ্য কেতাব রচনা করেছেন ।

তিনি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত এর অনুসারী ছিলেন এবং তার মাজহাব (jurisprudence) ছিল হানাফী ।

ওয়ালিউল্লাহ দেহলবী (রহঃ) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী (রহঃ) এর জন্ম, শিক্ষাজীবন, কর্মজীবন নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল-

নাম: কুতুবউদ্দিন আহমাদ বিন আব্দুর রহিম। তিনি ওয়ালিউল্লাহ নামে বেশি পরিচিত ছিলেন ।

পিতার নামঃ আব্দুর রহিম বিন ওয়াজিহুদ্দিন।

জন্ম: শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী (রহঃ) ১১১৪ হিজরি মুতাবেক ১০ ফেব্রুয়ারি ১৭০৩ খ্রিস্টাব্দে, ভারতের, মোজাফফরনগরে জন্মগ্রহণ করেন ।

শিক্ষা জীবন : শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী (রহঃ) নিজের পরিবারের মধ্যে থেকেই বড় হতে থাকেন । ৫ বছর বয়সে তাকে মাদ্রাসায় পাঠানো হয় । ৭ বছর বয়সে তিনি কোরআন শরীফ সম্পূর্ণ মুখস্থ করে নেন । তারপর পরিবারের পক্ষ থেকে উচ্চ শিক্ষা লাভের অনুমতি লাভ করেন ।

১৫ বছর বয়সে নিজের পিতার কাছে নকশাবন্দিয়া তরিকাতে বায়াত গ্রহণ করেন । তারপর প্রায়ই ১২ বছর পর্যন্ত দিল্লিতে অবস্থান করেন।

১৭৩০ খ্রিস্টাব্দে হজের উদ্দেশ্যে রওনা দেন । মক্কায় ১৪ মাস অবস্থান করেন । মক্কায় অবস্থানকালে বড় বড় মুহাদ্দিস ও মুফাসসির ও ফাকিহগণের কাছ থেকে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করেন । এরপর পর পর কয়েকবার তিনি মক্কায় যান, আর শিক্ষা লাভ করেন । তার একজন শিক্ষকের নাম শায়খ আবু তাহির । শাইখ আবু তাহির উচ্চশিক্ষার সনদ দেন ।

কর্মজীবন: উচ্চশিক্ষা লাভ করে এসে নিজের পিতার মাদ্রাসা “মাদ্রাসা রহিমিয়া” শিক্ষাদান শুরু করেন । এবং লিখনীর কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন ।

শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী আরবী ও ফারসী ভাষায় কিতাব রচনা করেছেন ।

তিনি সর্বদাই মুসলমানদের মধ্যে অক্ষ সাধনে কাজ করেছেন ।

ইসলামিক আকাইদ ও শরীয়তের বিষয়ে তার লেখনি গুলি অন্তর ছুয়ে দেয় ।

কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কেতাব (গ্রন্থ)

(১) ফাউযুল কাবির ফি অসুলিত- তাফসির (এই খেতাবটি প্রথমে ফারসি ভাষায় লিখা হয় । তারপর আরবি ভাষায় প্রকাশ করা হয় । উর্দু বাংলা সহ বিভিন্ন ভাষায় এর অনুবাদ করা হয়)

(২) তাবিলুল আহাদিস (تاويل الاحاديث) এই কিতাবের মধ্যে কুরআনে বর্ণিত নবীদের অবস্থা ও ঘটনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে ।

(৩) আল-মুসাফফা (المصفى)
এই গ্রন্থটিতে ‘মুয়াত্তা ইমাম মালিক’ এর ফারসি অনুবাদ ও ব্যাখ্যা রয়েছে ।

(৪) হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ (حجة الله البالغه) শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলবীর বিখ্যাত একটি কেতাব হল, হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ। শরীয়তের বিভিন্ন বিষয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণভাবে এ কেতাবের মধ্যে আলোচনা করা হয়েছে ।

(৫) আল খাবরুল কাসির (الخبر الكثير) তাওয়াসসুফ বা সুফি তথ্যের উপর লেখা মাসহুর একটি কেতাব।

তিনি অসংখ্য কিতাব লিখেছেন তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি উল্লেখ করা হলো ।

পরকাল গমন:- ৫৯ বছর বয়সে ২০ আগস্ট ১৭৬২ খ্রিস্টাব্দে ইন্তেকাল করেন ।

Spread the love

Leave a Comment