আমাদের নবী (সাঃ) কবে নবুওয়াত লাভ করেছেন?

আমাদের নবী (সাঃ) কবে নবুওয়াত লাভ করেছেন?

আমাদের নবী (সাঃ) ৪০ বছর বয়সে নবুওয়াতের প্রচার করেছেন, কিন্তু তিনি হযরত আদম আলাইহিস সালামের সৃষ্টির পূর্বেও নবী ছিলেন । এটাই সঠিক এবং ফাইনাল আকিদা । এর বিপক্ষে অবস্থান করলে হাদিসের বিরুদ্ধে অবস্থান করা হবে ।

প্রথম হাদিস শিয়া সাত্তা গ্রন্থ সমূহের মধ্যে একটি হাদীস গ্রন্থ তিরমিজি শরীফ থেকে ।

عن أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَتَى وَجَبَتْ لَكَ النُّبُوَّةُ قَالَ ‏ “‏ وَآدَمُ بَيْنَ الرُّوحِ وَالْجَسَدِ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ أَبِي هُرَيْرَةَ
আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, লোকেরা প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার নবুওয়াত কখন অবধারিত হয়েছে? তিনি বললেনঃ যখন আদম (আঃ) তার শরীর ও রুহের মধ্যে ছিলেন।
(তিরমিজি হাদিস নম্বরঃ ৩৬০৯,মিশকাত (৫৭৫৮)।

حَدَّثَنَا أَبُو هَمَّامٍ الْوَلِيدُ بْنُ شُجَاعِ بْنِ الْوَلِيدِ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
ইমাম তিরমিজি বলেন আমাদেরকে হাদীস বর্ণনা করেছেন, আবু হাম্মাম আল ওয়ালিদ বিন শুজা’ বিন আল ওয়ালিদ আল-বাগদাদী, তিনাকে হাদীস বর্ণনা করেছেন, আল ওয়ালিদ বিন মুসলিম, তিনি আওজায়ী থেকে, তিনি ইয়াহ ইয়া বিন আবু কাসীর থেকে তিনি আবু সালমা থেকে, তিনি আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে হাদিস বর্ণনা করেন ।

আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ, আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ)-এর বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে গারীব।

আরেকটি হাদীস লক্ষ্য করুন
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ: قِيلَ: يَا رَسُولَ اللهُ مَتَى كُتِبْتَ نَبِيًّا؟ قَالَ: وَآدَمُ بَيْنَ الرُّوحِ وَالْجَسَدِ
المعجم الكبير للطبراني – 14648
ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, বলা হলো, হে আল্লাহর রাসূল আপনার নবুয়াত কবে অবধারিত হয়েছে? নবী (সাঃ) বললেন যখন আদম (আঃ) তার শরীর ও রুহের মধ্যে ছিলেন। (অর্থাৎ যখন হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়নি তখনও আমি নবী ছিলাম) (আল-মু’জিমুল কাবির লিত-তাবারানী ১৪৬৪৮)

হাদীসটির সনদ এর দিকে লক্ষ্য করুন,
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْعَبَّاسِ الْبَجَلِيُّ الْكُوفِيُّ، ثنا مُحَمَّدُ بْنُ عُمَارَةَ بْنِ صُبَيْحٍ، ثنا نَصْرُ بْنُ مُزَاحِمٍ، ثنا قَيْسُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنْ جَابِرٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ اللهُ عَنْهُمَا
ইমাম তাবারানীর কাছে আলী বিন আব্বাস আল বাজালী আল কুফি হাদিস বর্ণনা করেন , তার কাছে মোহাম্মদ বিন উমারা বিন সুবাইহ হাদিস বর্ণনা করেন,তার কাছে নাসর বিন মুজাহিম হাদিস বর্ণনা করেন, তার কাছে কাইশ বিন রাবী’হাদিস বর্ণনা করেন, তিনি যাবির থেকে, তিনি শা’বী’ থেকে, তিনি ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমা ) থেকে হাদিস বর্ণনা করেন ।
সানাদ কত সুন্দর আপনারা দেখতে পাচ্ছেন । পূর্বের হাদীসটি আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আর এই হাদীসটি ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু মা) থেকে বর্ণিত ।

আরেকটি হাদীস লক্ষ্য করুন ।
عَنْ مَيْسَرَةَ الْفَجْرِ، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، ” مَتَى كُنْتَ نَبِيًّا؟ قَالَ: «وَآدَمُ بَيْنَ الرُّوحِ وَالْجَسَدِ» المعجم الكبير للطبراني
মাইসারা আল-ফাজর থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি বললামঃ ইয়া আল্লাহর রাসূল (সাঃ) আপনি কবে থেকে নবী আছেন ?
নবী (সাঃ) বললেন,যখন আদম (আঃ) তার শরীর ও রুহের মধ্যে ছিলেন।(আল-মু’জিমুল কাবির লিত-তাবারানী ২১৬১২)

এ হাদীসের সনদ একটু মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করুন, তিন দিক থেকে এ হাদীসের সনদ একত্রিত হয়েছে?

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُثْمَانَ بْنِ أَبِي شَيْبَةَ، ثنا يَحْيَى بْنُ مَعِينٍ، ح وَحَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ إِسْحَاقَ التُّسْتَرِيُّ، ثنا عَلِيُّ بْنُ بَحْرٍ، قَالُوا: ثنا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، ثنا مَنْصُورُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ بُدَيْلِ بْنِ مَيْسَرَةَ الْعُقَيْلِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ شَقِيقٍ،
عَنْ مَيْسَرَةَ الْفَجْرِ
তিন দিক থেকে এ হাদীসের সনদ এসে এক জায়গায় মিলিত হয়েছে । সেগুলো একটু ভালো করে লক্ষ্য করবে ।

(১)ইমাম তাবারানী বলেন, আমার কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন আব্দুল্লাহ, বিন আহমদ বিন হাম্বল, তার কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন তার পিতা ।

(২) ইমাম তাবরাণী বলেন আমার কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন, মোহাম্মদ বিন উসমান বিন আবী শাইবা, তার কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন, ইয়াহিয়া বিন মুইন ।

(৩) ইমাম তাবরাণী বলেন আমার কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন, হুসাইন বিন ইসহাক আত-তুসতারী , তার কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন, আলী বিন বাহার ।

তারা সকলেই বলছেন, আমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন, আব্দুর রহমান বিন মাহদী । তিন দিক থেকে সানাদ এসে এইখানে মিলিত হয়েছে ।
আব্দুর রহমান বিন মাহবুব বলেন আমার কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন, মানসুর বিন সাদ, তিনি বুদাইল বিন মাইসারা আল-উকাইলি থেকে, তিনি আব্দুল্লাহ বিন সাকিক থেকে, তিনি মাইসারা আল-ফাজর থেকে হাদিস বর্ণনা করেন ।
এই মর্মে বহু সহি হাদিস রয়েছে, শুধুমাত্র কয়েকটি তুলে ধরা হলো ।

কিছু পেট পুজারী মৌলবি সাহেব, সহি হাদিস গুলো কে অস্বীকার করে থাকেন । তাদেরকে জনসম্মুখে তওবা করতে হবে এবং তাজদীদে ঈমান অর্থাৎ কালিমা পড়ে নতুন করে ইসলামে আবার প্রবেশ করতে হবে ।

অনেক ইয়াহুদিদের দালাল বের হয়েছে তারা কুরআন ও হাদিস বিরধী আকিদা প্রচার করে মানুষের ইমান কেড়ে নিচ্ছে । তাদের থেকে সাবধান থাকতে হবে ।

আল্লাহ যেন আমাদের ইমানের হেফাজত করেন । আমিন

Spread the love

Leave a Comment