কথিত আহলে হাদিস মুযাফফর বিন মুহসিনের মুখোশ উম্মোচন

মুযাফফর বিন মুহসিনের মুখোশ উম্মোচন

যুগের কথিত আহলে হাদিসরা যেভাবে হাদিসের নামে জালিয়াতি শুরু করেছে তা বলে শেষ করার মতো নয় । এরা হাদিসের নাম দিয়ে নিজের পেট বানানো অর্থাৎ কেতাবুল আন্দাজ থেকে বেশিরভাগ কথা বলে থাকে ।

সহিহ হাদিসকে জয়ীফ বানাতে, জয়ীফ হাদিসকে সহিহ বানাতে, জয়ীফ হাদিসকে জাল বানাতে, হাসান হাদিসকে মুনকার হাদিস বানাতে এদের একদম সময় লাগে না ।

বিভিন্ন হাদিসের অপব্যাখ্যা করে নিজের মন মতো মান নির্ণয় করে, বর্তমানের যুবক জেনারেল শিক্ষিত ভাইদেরকে পথভ্রষ্ট করাই এদের মূল লক্ষ্য ।

জেনারেল শিক্ষিত ভাইয়েরা ইসলাম সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না । তাই যেটা বলা হয় সেটাই চোখ বন্ধ করে মেনে নিয়ে এক সময় তারা শাইখ পূজায় আসক্ত হয়ে পড়েন ।

মোজাফফর বিন ইউসুফ, আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ, মতিউর রহমান বিহারী সহ একাধিক কথিত আহলে হাদিস নামধারী মৌলভী হাদিসের নামে জালিয়াতি করে, অপপ্রচারে চরম ব্যস্ত ।

আজকের এই প্রবন্ধের মধ্যে মোজাফফর বিন ইউসুফ এর মুখোশ উন্মোচন করা হবে ।

প্রথমে যা জেনে নিলে ভাল হয়ঃ

যয়ীফ হাদীস কাকে বলে? যয়ীফ হাদিস বলা হয় ঐ হাদীসকে যার সনদের মধ্যে হাদিস কবুল হবার শর্তগুলোর মধ্যে কোন একটি শর্ত অনুপস্থিত থাকে।

জাল হাদিস কাকে বলে? বলা হয় ঐ হাদিসকে যার সনদের মধ্যে মিথ্যাবাদী বর্ণনাকারী থাকে।

মোট কথা, জাল এবং যয়ীফ হাদীসের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যয়ীফ হাদীসকে জাল হাদিস বলা হয় না, আবার জাল হাদীসকে ও যয়ীফ বা দুর্বল হাদিস বলা হয়না। যদি কেও যয়ীফকে জাল ও জালকে যয়ীফ বলে তাহলে সে ১ নাম্বারের মূর্খ ।

এ পার্থক্য যে করতে পারেনা, আবার হাদীস নিয়ে লম্বা লম্বা কথা বলে, সে হচ্ছে এ যামানার এক অপব্যখ্যাকারী কথিত আহলে হাদিস, যে নাকি মুসলমানদেরকে বিভ্রান্ত করার টিকাদারী নিয়েছে।

লা-মাযহাবী,নামধারী আহলে হাদিসদের শায়েখ,মোজাফফর বিন মুহসিন । উনি আমাদের সালাত যে হচ্ছেনা তা প্রমাণ করার জন্য একটি বই লিখেছেন। নাম দিয়েছেন,
‘জাল হাদীসের কবলে রাসুল () এর সালাত’।

নবী () এর নামাজকে জাল হাদিসের কবলে বলছেন । তার মানে বুঝতে পারছেন কত বড় বেয়াদবি এবং কত বড় জঘন্য অপরাধ? নবী () এর নামাজকে জাল হাদিসের কবলে বলা চরম বড় অপরাধ । একজন সুস্থ মস্তিষ্কের মুসলমান ব্যক্তি কখনোই বলতে পারেনা । যাদের ঈমান তীরের মত বেরিয়ে গেছে তারাই এই জাতীয় কথা বলতে পারে । আল্লাহ যেন হেদায়েত দান করেন । আমিন

বইটির কভার দেখলে আপনি এ নামটি বাংলাতে এভাবেই দেখবেন। কিন্তু পাতা উল্টালেই পরের পৃষ্টার উপরে দেখবেন তিনি বইটির নাম আরবীতে লিখেছেন।

صلاة الرسول صلي الله عليه وسلم بقبضة الاحاديث الضعيفة والموضوعة

অর্থঃ- যয়ীফ ও জাল হাদীসের কবলে (ﷺ) এর সালাত।

আরবীতে উনি বলতে চেয়েছে, বইটি যয়ীফ এবং জাল হাদীসের সমন্বয়ের আলোকে লিখা হয়েছে। কিন্তু বইটির কভার পেইজে বাংলা নামের মধ্যে শুধু জাল হাদিসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এখন প্রশ্ন হলো,

আরবী নামের সেই যয়ীফ হাদীস গেল কোথায় ? তাহলে কি সে আরবী অনুবাদ করতে জানেনা? নাকি সে জানেনা যয়ীফ হাদীস কাকে বলে আর জাল হাদিস কাকে বলে এবং দুটুর মধ্যে পার্থক্য কী?

বাংলা বই কয়েকটা জোগাড় করে তিনি বই লিখেছেন । আরবী সম্পর্কে জ্ঞান নেই । যার আরবী জ্ঞান নেই সে আবার মানুষকে হাদিস বুঝাবে কি করে ?

বর্তমানে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন, যত জেনারেল শিক্ষিত ছেলেকে এরা নিজের জালে ফাঁসিয়ে নিজেদের শিশ্য বানিয়েছে , তাদের সকলেই বাংলা পিডিএফ ও মোবাইল অ্যাপস পড়ে মাওলানা সেজে বসে আছে । আরবি সম্পর্কে ৯৯% জন লামাজহাবির জ্ঞান নেই ।

লেখকের নিকট তার লিখিত বইয়ের আরবী নাম আর বাংলা নাম একই। এখানে কোন ভুল নেই। আপনি যদি বলেন, লেখক এখানে নাম দীর্ঘ হয়ে যাবার ভয়ে শর্ট করে লিখেছে। এটা কি গ্রহণযোগ্য ? অবশ্যই নয়।

আরবীতে বইয়ের নাম লিখলেন- জাল ও যয়ীফ হাদীসের কবলে আর বাংলাতে তা শর্ট হয়ে তা হয়ে গেল কেবল জাল হাদিসের কবলে? শর্ট করার নামে জাল হাদিস এর কথা উল্লেখ করে বুঝানো হলো- জাল আর যয়ীফ হাদিস একই যে, উভয়টির নাম উল্লেখ না করে একটিই উল্লেখ করা হলো ?

অবাক লাগে, এই বই পড়ে নাকি জামায়াতে ইসলামীর মাওলানা সাঈদী বলেছিলেন, আমি ৬৮ বছর পর আজ নতুন করে নামাজ শিখলাম।

এভাবেই হাদিসের নামে জালিয়াতি, অপব্যাখ্যা, মন গড়ানো কথা বলে যুবক ছেলেদের আকৃষ্ট করে ও আরো বেশি করতে চাই ।

সম্মানিত পাঠক, তো বইয়ের নামের মধ্যে যখন এই জালিয়াতি, তখন ভাবুন, ভেতরে কী পরিমাণ জালিয়াতির স্তুপ রয়েছে।

আমরা একের পর এক বিস্তারিত তথ্যগুলো আপনাদের সামনে নিয়ে আসব এবং তাদের মুখোশ উম্মোচন করব । ইনশা আল্লাহ

এবার পড়ুন-

Spread the love

Leave a Comment