কুরবানীর গুরুত্বপূর্ণ ১০টি মাসআলা

কুরবানীর গুরুত্বপূর্ণ ১০টি মাসআলা

(১) কান বা লেজ কাটা পশুর কুরবানীঃ- যে পশুর লেজ বা কান অর্ধেক বা তারও বেশি কাটা সে পশুর কুরবানী জায়েয হবে না। আর যদি অর্ধেকের কম থাকে তাহলে তার কুরবানী জায়েয। তবে যদি জন্মগতভাবেই কান ছোট হয় তাহলে অসুবিধা নেই কুরবানী হয়ে যাবে । (মুসনাদে আহমদ ১/৬১০,আলমগীরী ৫/২৯৭-২৯৮)

(২) অন্ধ পশুর কুরবানীঃ- যে পশুর দুটি চোখ অন্ধ বা এক চোখ পুরোই নষ্ট সে পশু কুরবানী করা জায়েয নয়। (কাযীখান ৩/৩৫২, আলমগীরী ২৯৭)

(৩) গর্ভবতী পশুর কুরবানীঃ- র্ভবতী পশু কুরবানী করা জায়েয। জবাইয়ের পর যদি বাচ্চা জীবিত পাওয়া যায় তাহলে সেটাও জবাই করতে হবে। তবে প্রসবের সময় আসন্ন হলে সে পশু কুরবানী করা মাকরূহ। (বাচ্চাটা জবেহ না করে সাদকাহ করে দিলেও হবে) (কাযীখান ৩/৩৫০)

আর যদি কুরবানীর পশু কুরবানীর দিন আসার আগেই বাচ্চা দিলে ওই বাচ্চা জবাই না করে জীবিত সদকা করে দেওয়া উত্তম। যদি সদকা না করে তবে কুরবানীর পশুর সাথে বাচ্চাকেও জবাই করবে এবং গোশত সদকা করে দিবে।-(কাযীখান ৩/৩৪৯, আলমগীরী)

(৪) পশু কেনার পর দোষ দেখা দিলেঃ- কুরবানীর নিয়তে ভালো পশু কেনার পর যদি তাতে এমন কোনো দোষ দেখা দেয় যে কারণে কুরবানী জায়েয হয় না তাহলে, ওই পশুর কুরবানী সহীহ হবে না। এর স্থলে অন্য পশু কুরবানী করতে হবে। তবে ক্রেতা গরীব হলে (কম) ত্রুটিযুক্ত পশু দ্বারাই কুরবানী করতে পারবে। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৯,রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৫)

(৫) বন্ধ্যা পশুর কুরবানীঃ- বন্ধ্যা পশুর কুরবানী জায়েয। [রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৫]

(৬) নিজের কুরবানীর পশু নিজে জবাই করাঃ- কুরবানীর পশু নিজে জবাই করা উত্তম। নিজে না পারলে অন্যকে দিয়েও জবাই করাতে পারবে। এক্ষেত্রে কুরবানীদাতা পুরুষ হলে জবাইস্থলে তার উপস্থিত থাকা উত্তম। [আলমগীরী ৫/৩০০]

(৭) জবাইয়ে একাধিক ব্যক্তি শরীক হলেঃ- অনেক সময় জবাইকারীর জবাই সম্পন্ন হয় না, তখন কসাই বা অন্য কেউ জবাই সম্পন্ন করে থাকে। এক্ষেত্রে অবশ্যই উভয়কেই নিজ নিজ যবাইয়ের আগে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ পড়তে হবে। যদি কোনো একজন না পড়ে তবে ওই কুরবানী সহীহ হবে না এবং জবাইকৃত পশুও হালাল হবে না। [রদ্দুল মুহতার ৬/৩৩৪]

(৮) কুরবানীর পশুর দুধ পান করাঃ- কুরবানীর পশুর দুধ পান করা যাবে না। যদি জবাইয়ের সময় আসন্ন হয় আর দুধ দোহন না করলে পশুর কষ্ট হবে না বলে মনে হয় তাহলে দোহন করবে না। প্রয়োজনে ওলানে ঠান্ডা পানি ছিটিয়ে দেবে। এতে দুধের চাপ কমে যাবে। যদি দুধ দোহন করে ফেলে তাহলে তা সদকা করে দিতে হবে। নিজে পান করে থাকলে মূল্য সদকা করে দিবে। [মুসনাদে আহমদ ২/১৪৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৯, কাযীখান ৩/৩৫৪, আলমগীরী ৫/৩০১]

(৯) কুরবানীর গোশত বণ্টনঃ- শরীকে কুরবানী করলে ওজন করে গোশত বণ্টন করতে হবে। অনুমান করে ভাগ করা জায়েয নয়। [আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৭, কাযীখান ৩/৩৫১]

(১০) কুরবানীর গোশত জমিয়ে রাখাঃ– কুরবানীর গোশত তিনদিনেরও অধিক জমিয়ে রেখে খাওয়া জায়েয। [মুয়াত্তা মালেক ১/৩১৮, ইলাউস সুনান ১৭/২৭০]

আল্লাহু ও রাসুলুহু আ’লাম

কুরবানী কার উপর ওয়াজীব জানতে এখানে ক্লিক করুন।

Spread the love

Leave a Comment