সাইয়িদুল ইস্তিগফার
জীবনের চলার পথে মানুষ ছোট অথবা বড় ভুল করে থাকে । মানুষ জেনে বুঝে অথবা অজান্তে যখন গুনার কাজ করে ফেলে তখন শয়তান খুব খুশি হয় । কিন্তু আপনি জানেন কি আল্লাহর কাছে ইস্তেগফার অর্থাৎ ক্ষমা চাইলে আল্লাহ সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা করে দেন ।
আবু সায়িদ খুদরি (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)কে বলতে শুনেছিঃ “ইবলিস তার রবকে বলেছেঃ আপনার ইজ্জত ও বড়ত্বের কসম, আমি বনি আদমকে ভ্রষ্ট করতেই থাকব যতক্ষণ তাদের মধ্যে রূহ থাকে। আল্লাহ বলেনঃ আমার ইজ্জত ও বড়ত্বের কসম, আমি তাদের ক্ষমা করতে থাকব যতক্ষণ তারা আমার নিকট ইস্তেগফার করে”। [আহমদ]
ক্ষমা চাওয়ার জন্য আমরা বলে থাকি “আস্তাগফিরুল্লাহ” আল্লাহ ক্ষমা করে দাও । যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তেগফার করে আল্লাহ তাকে পছন্দ করেন । ক্ষমা চাওয়ার জন্য হাদিসে বর্ণিত সাইয়িদুল ইস্তেগফার শ্রেষ্ঠ একটি দোয়া । সাইয়িদুল ইস্তেগফার পাঠ কারি ব্যক্তি যদি রাত্রে অথবা দিনে মারা যায় তাহলে সে জান্নাতি হবে । ইন শা আল্লাহ
পাপের কাজ ছেড়ে দিয়ে খালিশ মনে তওবা করলে সমস্ত প্রকার ছোট ও বড় গুনাহ মাফ হয়ে যায় ।
মনে রাখার বিষয় হল, কয়েকটি গুনাহ আছে যা ইস্তেগফার করেও মাফ হয় না ।
(১) হক নষ্ট করা।
(২) মানুষকে কষ্ট দেওয়া।
(৩) পিতা মাতাকে কষ্ট দেওয়া।
(৪) ওজনে ফাঁকি দেওয়া । ইত্যাদি
এই গুনাহ কঠিন বড় গুনাহ । ইস্তেগফার বা তওবা করা দ্বারা এ গুনাহ ক্ষমা হয় না । এর জন্য প্রথমে ওই সমস্ত মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, তাহলে আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করবেন । তাই বান্দার হক নষ্ট করার পূর্বে একবার অবশ্যই চিন্তা করবেন ।
সাইয়িদুল ইস্তিগফার
আরবী উচ্চারণ:
اَللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّىْ لآ إِلهَ إلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِىْ وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّمَا صَنَعْتُ، أبُوْءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَىَّ وَأَبُوْءُ بِذَنْبِىْ فَاغْفِرْلِىْ، فَإِنَّهُ لاَيَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ
বাংলা উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আনতা রাব্বী লা ইলাহা ইল্লা আনতা খালাকতানি, ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাতা’তু, আউজুবিকা মিন শাররি মা সানাতু। আবুউ লাকা বি-নিমাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবুউ বিযাম্বী ফাগফিরলী ফাইন্নাহু লা ইয়াগফিরুয যুনুবা ইল্লা আনতা। (বুখারী, মিসকাত)
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার পালনকর্তা। তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার দাস। আমি আমার সাধ্যমত তোমার নিকটে দেওয়া অঙ্গীকারে ও প্রতিশ্রুতিতে দৃঢ় আছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হ’তে তোমার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি আমার উপরে তোমার দেওয়া অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমি আমার গোনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা কর। কেননা তুমি ব্যতীত পাপসমূহ ক্ষমা করার কেউ নেই’
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনন, ‘যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এই দো‘আ পাঠ করবে, দিনে পাঠ করে রাতে মারা গেলে কিংবা রাতে পাঠ করে দিনে মারা গেলে, সে জান্নাতী হবে’।
সাইযয়িদুল ইস্তেগফারের একটি ঘটনা
হাসান বসরী রাহ. এর কাছে একবার এক ব্যক্তি জানালো “ তার ফসলে খরা লেগেছে। তাকে যেনো কোন আমল দিন” হাসান বসরী তাকে বললেন নিয়মিত এস্তেগফার করো। কিছুক্ষণ পর অন্য আরেক ব্যক্তি এসে অভিযোগ পেশ করল “আমি অনেক গরীব। আমাকে কিছু রিজক এর আমল দিন” হাসান রহ. তাকেও বলেলন নিয়মিত এস্তেগফার করো।
এমনিভাবে অপর এক ব্যক্তি এসে সন্তান হওয়ার আমল সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বললেন, নিয়মিত এস্তেগফার করো।” সেখানে উপস্থিত ছাত্ররা জিজ্ঞেস করল, “ হুজুর সবাইকে একই পরামর্শই দিলেন যে?” বিখ্যাত তাবেয়ী হাসান বসরী রহ. তখন বললেন “আমি নিজের পক্ষ থেকে কিছুই বলি নি। এটা বরং আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা তার পবিত্র কুরআনে শিখিয়েছে। তারপর তিনি সুরা নুহ এর আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন। (তাফসীরে কুরতুবী ১৮/৩০৩)
নুহ আ. বললেন “তোমরা তোমাদের রবের কাছে নিয়মিত এস্তেগফার করো। (ক্ষমা চাও) নিশ্চয় তিনি অনেক ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপরে অজস্র বারিধারা ও রহমত বর্ষণ করবেন। তিনি তোমাদের ধন-সম্পদ এবং সন্তান-সন্ততি বৃদ্ধির মাধ্যমে তোমাদের সাহায্য করবেন। তোমাদের জন্যে উদ্যান তৈরি করবেন, তোমাদের জন্যে নদীনালা প্রবাহিত করবেন।” (সুরা নূহ- ১০-১২)
চ্যানেলটা ডিলিট করলেন কেনো?
খুব তাড়াতাড়ি নতুন চ্যানেলে কাজ শুরু হবে, ইন শা অল্লাহ । দুআ করবেন যে খুব সুন্দর চ্যানেল চালাতে পারি ।