সব সময় হাসিখুশি থাকার ইসলামী কৌশল

সব সময় হাসিখুশি থাকার ইসলামী কৌশল নিয়ে আজকের লেখনী । সম্পূর্ণ পড়লে অনেক উপকৃত হবেন, ইন শা আল্লাহ ।

সব সময় হাসিখুশি থাকার ইসলামী কৌশল

(১) আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্টি:

রাসূল (সাঃ) বলেন: “ওই ব্যক্তিই ঈমানের স্বাদ গ্রহণ করবে যে ব্যক্তি আল্লাহকে প্রতিপালক,ইসলামকে দ্বীন (জীবন ব্যবস্থা) এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রাসুল হিসেবে সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নিল।” (সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, আনাস রা. হতে বর্ণিত)

যে আল্লাহ তাআলাকে প্রতিপালক হিসেবে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করবে স্বাভাবিকভাবে তার অন্তরে অস্থিরতা ও দু:শ্চিন্তা স্থান পাবে না। কারণ সে জানে মহান আল্লাহ অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান ও কুশলী আর তার প্রতিটি সিদ্ধান্তই প্রজ্ঞাপূর্ণ। তাই তার ভাল-মন্দ সকল সিদ্ধান্তে সন্তুষ্টি থাকার মাধ্যমেই হৃদয়ে জাগ্রত হয় অনাবিল প্রশান্তি।

(২) সত্যবাদিতা:

সত্যবাদিতার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত প্রশান্তি । পক্ষান্তরে মিথ্যায় রয়েছে মানসিক অশান্তি, সন্দেহ, সংশয় ও অস্থিরতা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “সত্য হল প্রশান্তি আর মিথ্যা হল সংশয়।” (মুসনাদ আহমদ, মুস্তাদরাক হাকিম, মিশকাত)

সত্যবাদিতার তিনটি ক্ষেত্রে রয়েছে

(১) আল্লাহর সাথে সত্যবাদিতাঃ প্রশান্ত হৃদয়ের অধিকারী মুমিন হবে।

(ক) কথায় সত্যবাদীঃ তার মুখ থেকে কখনও অসত্য কথা বের হবে না।

(খ) আচরণে সত্যবাদীঃ সে হঠাৎ করেই রঙ বদলাবে না বা ধোঁকাবাজি ও মুনাফেকি করবে না।

(গ) কর্মে সত্যবাদীঃ সে আমল করবে ইখলাসের সাথে এবং রাসূল (সাঃ) এর দেখানো পদ্ধতির আলোকে।

(২) বান্দাদের সাথে সত্যবাদিতাঃ আল্লাহ ও তার মাঝে যে চেহারা থাকে মানুষের সাথে উঠবস ও লেনদেনের সময় তার চেয়ে ভিন্ন চেহারা নিয়ে হাজির হবে না।

(৩) নিজের সাথে সত্যবাদিতাঃ যা সে বিশ্বাস করে তা সে কর্মে বাস্তবায়ন করে। নিজেকে সংশোধন করে, আত্ম সমালোচনা করে এবং প্রবৃত্তির টানে ছুটে বেড়ায় না আর একান্ত একাকীত্বেও আল্লাহর ভয় হৃদয়ে জাগ্রত রেখে হারাম থেকে দূরে থাকে।

(৩) তাকওয়া অবলম্বন:

তাকওয়া বা আল্লাহর ভয় তার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রকে নিয়ন্ত্রণ করে। যার কারণে সে আল্লাহর ইবাদত করে; অবাধ্যতা করে না। কৃতজ্ঞতা আদায় করে; অকৃতজ্ঞ হয় না। আল্লাহকে স্মরণ করে; তাকে ভুলে থাকে না আর বেঁচে থাকে বড়-ছোট সকল প্রকার পাপাচার থেকে।

স্বাভাবিকভাবে মানুষ যখন আল্লাহর ভয় হৃদয়ে জাগ্রত রাখে তখন সে যেমন আল্লাহর অধিকার লঙ্ঘন করে না ঠিক তেমনি বান্দার হকও নষ্ট করে না। এতে হৃদয়ে বিরাজ করে এক অভূতপূর্ব তৃপ্তি ও অবর্ণনী প্রশান্তি।

পক্ষান্তরে আল্লাহর দাসত্ব থেকে বের হয়ে গেলে এবং বান্দার অধিকারে হস্তক্ষেপ করলে সমাজে বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়। যার প্রভাবে অপরাধীর হৃদয়ে অশান্তির দাবানল জ্বলতে থাকে আর অস্থিরতা ও দু:শ্চিন্তা তাকে গ্রাস করে।

(৪) সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ:

মানুষকে কল্যাণের পথে আহ্বান করা, আল্লাহ তাআলা যে কাজে রাগ করেন সে কাজ থেকে সতর্ক করা এবং এ পথে ধৈর্য ধারণ করা।

(৫) অধিক পরিমানে আল্লাহর যিকির করা:

আল্লাহ বলেন: “জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়।” [সূরা রাদ: ২৮]

কুরআন তিলাওয়াত সবচেয়ে বড় যিকির। তারপর সকাল সন্ধ্যার দুআ-যিকির,পাঁচওয়াক্ত সালাত/নামাজ, অন্যান্য তাসবীহ-তাহলীল, ইস্তিগফার ইত্যাদি অধিক পরিমানে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে মনে অভাবনীয় প্রশান্তি অর্জিত হবে ইনশাআল্লাহ।

নিচে আরো পড়ুন…

সব সময় মন ভালো রাখার ইসলামী কৌশল

গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার শক্তিশালী পরামর্শ

পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী হওয়ার উপায়

 

Spread the love

Leave a Comment