আহলে হাদিস ১০০% বেদাতি দল প্রমাণ দেখুন

আহলে হাদিস ১০০% বেদাতি দল

জনসাধারণের চোখে ফাঁকি দিয়ে যেভাবে কিছু শায়েখ মানুষকে বেদাতের উপর চলার জন্য জোর দিচ্ছে তা চিন্তার বিষয় । আহলে হাদিস নাম দিয়ে দল তৈরি করা সম্পূর্ণ বেদাত যা আমি প্রথম পর্বে প্রমাণ করেছি । আজ দ্বিতীয় পর্বে আরো কিছু তথ্য তুলে ধরব যার দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণ হবে ‘আহলে হাদিস ১০০% বেদাতি দল’ ।

যারা প্রায় প্রত্যেক বিষয়ে নিজের ইচ্ছামতো মনগড়া ব্যাখ্যা দেয়। ইজতিহাদ করার ক্ষমতা না থাকার সত্যেও জোর করে উলটা পালটা ইজতিহাদ করে সমাজে ফিতনা ছড়ায় । এরা অনেক বিষয়ে হিটলারের পলিসি ফলো করে ।

“If you tell a lie big enough and keep repeating it, people will eventually come to believe it”

যদি তুমি একটি বড় মিথ্যা কথা বলো আর সেটাকে বারবার রিপিট করো তাহলে মানুষ সেটাকে বিশ্বাস করতে শুরু করবে ।

আমি পূর্বে আলোচনা করেছি আহলে হাদিস বা আসহাবে হাদিস মুহাদ্দিসগণের উপাধি ছিল এটা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত বিরোধী কোন ধর্মীয় দল ছিল না। যাদের ফজিলতের কথা হাদীস শরীফে পাওয়া যায় এবং অনেক বড় বড় ইমাম তাদের প্রশংসা করেছেন । সেই নাম ব্যবহার করে বর্তমানে আহলে হদিস নাম দিয়ে একটি দল তৈরি করা হয়েছে । এবং এটাই সঠিক দল এটাই সঠিক পথ বলে হিটলারের পলিসি বারবার ফলো করা হয়েছে এখন মানুষ সেটাকে সঠিক একটি দল বলে মনে করতে শুরু করেছে ।

যেমন বর্তমানে আরেকটি দল আহলে কোরআন নাম দিয়ে খুব প্রচার ও প্রসার করছে এত প্রচার প্রসার করছে পরবর্তীতে মানুষ তাদেরকেও সঠিক দল হিসেবে ভাবতে শুরু করবে।

আসহাবুল হাদিস বা আহলুল হাদিস এদের ফজিলত রয়েছে । যারা এই উপাধি পেয়েছেন তারা সকলেই বড় মাপের মুহাদ্দিস বা হাদিস বিশারদকারী, হাফিজুল হাদিস। এখন জনসাধারণ যদি নিজেদেরকে আহলে হাদিস দাবি করতে শুরু করে তাহলে সেটা হাস্যকর বিষয় নয়?

মূলত اصحاب الحديث (আসহাবে হাদিস) থেকে ~ اهل الحديث আহলে হাদিস বানানো হয়েছে যা মুহাদ্দিসগণের উপাধি ছিল । এতোটুকু মনে রাখলেই হবে । এবার আগে পড়ুন ।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,

اَمۡ حَسِبۡتَ اَنَّ اَصۡحٰبَ الۡـكَهۡفِ وَالرَّقِيۡمِۙ كَانُوۡا مِنۡ اٰيٰتِنَا عَجَبًا

আপনি কি ধারণা করেছেন, গুহা ও গর্তের অধিবাসীরা আমার নিদর্শনাবলীর মধ্যে বিস্ময়কর ছিল ? (সূরা কাহাফ ৯ নং আয়াত)

এই আয়াতের ভিতরে اَصۡحٰب الۡـكَهۡفِ (আসহাবুল কাহাফ) এর কথা উল্লেখ রয়েছে । মূলত মহান আল্লাহ তায়ালা সূরা কাহাফ এর মধ্যে সেই গুহাববাসীদের প্রশংসা করেছেন । যারা ঈমান বাঁচাতে গুহার মধ্যে আশ্রয় নিয়েছিল । সকলেই তারা ছিল নাজাত প্রাপ্ত ।

এখন যদি اَصۡحٰب الۡـكَهۡفِ /اَصۡحاب الۡـكَهۡفِ এর প্রশংসা শুনে কেউ اَهل الۡـكَهۡفِ (আহরুল কাহাফ/ আহলে কাহাফ) নাম দিয়ে একটি দল তৈরি করে প্রচার ও প্রসার করে তাহলে কেমন হবে?

কয়েক বছর পর দেখা যাবে সে দলের অনেক অনুসারী তৈরি হয়ে গেছে । এরপর যদি কেও আপত্তি করে যে, এই নামে দল তৈরি করা বেদাত । আর তারা উত্তর দেয় এটা বেদাত নয় কারণ কুরআনে আছে, তাহলে কি এটা মুর্খামি হবে না?

সেই রকম একইভাবে اصحاب الحديث (اهل الحديث)) এর প্রশংসার কথা পাওয়া যায় । মূলত এটি হাদিস বিশারদকারী বা হাফিজুল হাদীসগণের উপাধি। আর এই ‘আসহবুল হাদিস’ এর প্রশংসা শুনে বর্তমানে আহলে হাদিস নামে দল তৈরি করা হয়েছে ।

যেমনভাবে আহলে কাহাফ নাম দিয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত বিরোধী দল তৈরি করা বেদাত তেমনিভাবে আহলে হাদিস নাম দিয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত বিরোধী দল তৈরি করা বেদাত ।

ভারতে ফরাজী আন্দোলনের founder হাজী শরীয়াতুল্লাহ (১৭৮১-১৮৪০) তিনি সুন্নি ছিলেন এবং হানাফি school of thought follow করতেন । পরবর্তীতে ওহাবীদের ছোঁয়া লেগে এই ফরাজিরা বিভিন্নভাবে নাম পরিবর্তন করতে থাকে ।

কখনো মুহাম্মদী, কখনো সালাফী, কখনো লা মাযহাবী, আর বর্তমানে আহলে হাদিস । এখনো বিভিন্ন জায়গায় ফরাজী গ্রাম আছে একটু খোঁজ করলে পেয়ে যাবেন । তবে আর কয়েক বছর পর তাদের চিহ্ন মুছে ফেলা হবে ।

যে ফরাজি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা সে নিজের সুন্নি এবং হানাফী ছিলেন তারমানে “ফরাজী” নামে তিনি একটি সংগঠন তৈরি করেছিলেন এবং ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন । কখনোই তিনি এটিকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত এর বিপক্ষে খাড়া করেননি ।

আহলে হাদিস ১০০% বেদাতি দল এ কথা আশ করি আপনার মাথায় ঢুকেছে । এবার আরো একটু আগে চলুন ।

তাদের সামনে এ কথা বলতে গেলে তারা “আহলুল হাদিস” গণের ফজিলতের কথা শুনাবে, ,, পূর্বের ভিডিওতে এর উত্তর আমি দিয়েছি । এই ভিডিওতে আরেকটু আলাদাভাবে উত্তরটা দিচ্ছি যাতে আপনাদের বুঝতে সুবিধা হয়_

إِنَّمَا يُرِيدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا

হে আহলে বাইত নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করে তোমাদেরকে অতি পবিত্র রাখতে চান। (সুরা আহযাব ৩৩)

পবিত্র কোরআনের এই আয়াতের মধ্যে ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে । এখন যদি আহলুল বাইত নাম দিয়ে একটি দল তৈরি করা হয় তাহলে কি সেটা সঠিক হবে?

যে সমস্ত মানুষের আইকিউ অনেক কম বা দুর্বল তারাও বলবে না এটা সঠিক হবে না ।

আহলুল হাদীস এদের ফজিলত দেখে সেই নাম দিয়ে দল বানিয়ে ফেলাও সেই রকম সঠিক হবে না। সম্পূর্ণ বেদাত হবে

একই কথা বারবার প্রচার করার জন্য বর্তমানে মানুষ সেটাকে সঠিক ভাবতে শুরু করেছে কিন্তু শিক্ষিত সমাজ যদি একটু গবেষণা করে তাহলে তাদের ফেতনা ধরে ফেলতে পারবে ।

তারা আহলে হাদিস বানানোর কিছু টেকনিক তৈরি করে রেখেছে যার দ্বারা যুবকদেরকে সহজে ফাঁদে ফেলে দেয় । খুব তাড়াতাড়ি সে টেকনিকগুলি জনসম্পদ মুখে ফাঁস করে দেবো, যাতে করে যুবক সমাজ সাবধানতা অবলম্বন করতে পারে।

আহলে হাদিস ১০০% বেদাতি দল এ কথা আশ করি বুঝতে পেরেছেন । এরা বড় বড় ইমামদের বিরুদ্বে উঠে পড়ে লেগেছে অথচ ভালো করে আরবী পড়তে পারে না । মাজহাব সম্পর্কে ভুল কথা দিনরাত প্রচার করে । দিনরাত বেদাত বেদাত করে চিৎকার করে অথচ তারা বেদাতের উপর প্রতিষ্ঠিত ।

আরো পড়ুন…..

আহলে হাদিসের জন্ম কত সালে?

১৯৩০ সালে আহলে হাদিস ভারতের একটি ছোট রাজনৈতিক দল হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

আহলে হাদিস কী?

মূলত এটি হাদিস বিশারদকারী বা হাফিজুল হাদীসগণের উপাধি। আর এই ‘আসহবুল হাদিস’ এর প্রশংসা শুনে বর্তমানে আহলে হাদিস নামে দল তৈরি করা হয়েছে ।

সালাফী শব্দের অর্থ কি?

শাব্দিক অর্থ পূর্বপুরুষ। আর ব্যবহারিক অর্থ ইসলামের প্রথম যুগের মানুষগণ। অর্থাৎ সাহাবী, তাবেঈ ও তাবে-তাবেঈগণ, যাঁদের ব্যাপারে রাসূল (সা.) বলে গিয়েছেন, তাঁরা হলেন উম্মাতদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ উম্মাত।

Spread the love

Leave a Comment